বান্দরবান পৌরসভা নির্বাচন
নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান :
বান্দরবান পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে পৌর এলাকায়। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলছে বিভিন্ন প্রার্থীর মাইকিং, পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা। নির্বাচনী পরিবেশ নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সব দলের প্রার্থীরা।
জানা গেছে, এবারের পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৯ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। এদের মধ্যে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের থেকে বর্তমান মেয়র দলের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম বেবী বিএনপি থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মো. জাবেদ রেজা জাতীয় পার্টি থেকে মো. শাহজাহান নাগরিক পরিষদ সমর্থিত প্রার্থী নাছির উদ্দীন ও সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিধান লালা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তবে কে হবে আগামী পৌর মেয়র তা নিয়ে এখন সর্বত্র চলছে আলাপ আলোচনা।
নির্বাচনী বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী অংশ নিলেও মূলত লড়াই হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থী ইসলাম বেবী ও জাবেদ রেজার মধ্যে। এ দুই প্রার্থী মেয়র হিসেবে ৫ বছর করে পৌরসভার দায়িত্বও পালন করেছেন সে হিসেবে পৌর এলাকার মানুষের কাছে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে এবং এলাকার উন্নয়ন করার সুযোগও পেয়েছেন এবং দুজনই নিজ দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তাই দুজনই আবারো মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পেতে নিজ নিজ দলের নেতাকর্মী সমর্থক ও সাধারণ ভোটারের কাছে তুলে ধরছেন নানা উন্নয়ন ও সুযোগ সুবিধার কথা।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইসলাম বেবী বলেন, ৫ বছর পৌরসভার মানুষের সেবা করেছি তারা যদি আবার সহযোগিতা করে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে তবে মন্ত্রীর সহযোগিতায় পৌর এলাকায় যে উন্নয়ন করেছি তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। এবং অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে পারব এবং আশা করি মানুষ উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট দিবে।
অপরদিকে বিএনপি প্রার্থী জাবেদ রেজা বলেন, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তবে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হবো। ৫ বছর পৌরসভার দায়িত্ব পালন করেছি এবং এখনও আমার আমলের উন্নয়নের কাজ বান্দরবান পৌর এলাকায় চলছে। পৌর পিতা নয় পৌর সেবক হিসেবে মানুষের সেবা করেছি এবং ভবিষ্যতেও সেবক হিসেবে মানুষের সেবা করব।
এদিকে বড় দুই দলের মধ্যে লড়াই হলেও নতুন প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আসছে নাগরিক পরিষদ সমর্থিত প্রার্থী নাছির উদ্দীনের নাম। সাধারণ মানুষ বলছে বড় দুই দলে নেতাকর্মীদের মধ্যে কিছুটা অন্তর্কোন্দল থাকায় তৃতীয় পক্ষ হিসেবে নারিকেল গাছ প্রতীকে নাছির উদ্দীন ভোটে এগিয়ে থাকতে পারে। কেননা নির্বাচনে মার্কা জাতীয় প্রতীক হওয়ায় বিএনপি নেতাকর্মীরা নৌকা প্রতীকে ভোট দিবে না, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধানের শীর্ষ প্রতীকে ভোট দিবে না। তাই তৃতীয় পক্ষ হিসেবে নাছির উদ্দীন এই সুবিধা পেতে পারে বলে জানান সাধারণ ভোটাররা। সে সুযোগ কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে নাগরিক পরিষদ সমর্থিত প্রার্থী নাছির উদ্দীন। যাচ্ছে ভোটারের দ্বারে দ্বারে, দিচ্ছে নানা আশ্বাস। ইভিএম এ বান্দরবানে এই প্রথম বারের মত ভোট হওয়ায় নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে কৌতূহল দেখা দিয়েছে সাধারণ জনমনে।
তবে বান্দরবান পৌরসভা নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে শেষ করতে সকল প্রস্তুতি শেষ বলে জানান জেলা নির্বাচন অফিসার রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, বান্দরবান পৌরসভার নির্বাচনে প্রথম বারের মত ইভিএম ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে ৯টি ওয়ার্ডে ১৩টি কেন্দ্রে ৮১টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে। সে লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ১৩ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ৮১ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং ১৬২ জন পোলিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বান্দরবান পৌর এলাকায় মোট ভোটারের সংখ্যা ২৯ হাজার ৭ শত ২৯ জন।