সুপ্রভাত স্পোর্টস ডেস্ক »
শেষ দিনে রোমাঞ্চকর এক জয় তুলে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে সোমবার সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৪২ রান।
প্রথম টেস্ট জিতে সিরিজে এগিয়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্টেও জয়ের খুব কাছাকাছি দলটি। তাতে পাকিস্তানের মাটিতে নতুন ইতিহাস লেখার পথেই টাইগাররা।
প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানকে ২৭৪ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের ১৭২ রানে আটকে দিয়েছেন হাসান মাহমুদরা। জয়ের জন্য ১৮৫ রানের লক্ষ্য পেয়ে কোন উইকেট না হারিয়ে ৪২ রান তুলে ফেলেছে বাংলাদেশ। শেষ দিন জয়ের জন্য ১৪৩ রান দরকার।
দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানকে ধসিয়ে দেওয়ার কাজটা করেছেন দলের তিন পেসার হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা ও তাসকিন আহমেদ। তারা তিনজন মিলে পাকিস্তানের ১০ উইকেটই তুলে নিয়েছেন। দেশের ক্রিকেটে যা রেকর্ড। দেশের টেস্ট ইতিহাসে এবারই প্রথম বাংলাদেশের পেসাররা এক ইনিংসের সব উইকেট নিলেন।
১৮৫ রানের জয়ের লক্ষ্য থেকে ১৪৩ রান দূরে রয়েছে বাংলাদেশ। হাতে অক্ষত আছে ১০ উইকেটের সবকটি। প্রকৃতি বিরূপ না হলে ইতিহাস গড়ার খুব কাছেই টাইগাররা।
আলোক স্বল্পতায় ম্যাচ বন্ধ হওয়ার আগে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল সব ফ্লাডলাইট। কিন্তু তাতেও খেলা চালিয়ে নেওয়ার অবস্থা ছিল না। মেঘে ঢাকা আকাশ ছিল থমথমে। এরপর বৃষ্টি নামায় মাঠকর্মীরা পিচ ঢেকে দেন। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি আর না থামলে ভেসে যায় দিনের বাকি খেলা।
তবে লক্ষ্য তাড়ায় নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল বেশ আগ্রাসী। বিশেষকরে জাকির হাসান। ২৩ বলে ৩১ রান করেন এই ওপেনার। তাতেই মেরেছেন দুটি করে চার ও ছক্কা। তার সঙ্গী সাদমান ইসলাম ১৯ বলে ৯ রানে অপরাজিত।
প্রথমবারের মতো কোনো পূর্ণ শক্তির দলের বিপক্ষে দেশের বাইরে টেস্ট সিরিজ জয়ের হাতছানি পাচ্ছে বাংলাদেশ। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশে একমাত্র সিরিজ জয়টি ছিল ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তবে বোর্ডের সঙ্গে ক্রিকেটারদের বনিবনা না হওয়ায় সেবার খেলেছিল দ্বিতীয় সারির ক্যারিবিয়ান দল।
কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩৭ রান তুলে চা বিরতিতে যাওয়ার আগে বাংলাদেশের পেসাররা দেখান দাপট। প্রথম সেশনের পর দ্বিতীয় সেশনেও তাদের নৈপুণ্যে সিরিজ জয়ের জোরালো সম্ভাবনা জেগেছে টাইগারদের।
পাকিস্তানকে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭২ রান অলআউট করতে ১০ উইকেটের সবগুলোই নেন তিন পেসার মিলেমিশে। টেস্টে প্রথমবার কোনো ইনিংসে প্রতিপক্ষের ১০ উইকেটের সবগুলো পান বাংলাদেশের গতিময় বোলাররা।
৪৩ রানে ৫ উইকেট নেন লাইন ও লেংথে নিখুঁত থাকা হাসান মাহমুদ। গতির ঝড় তোলা নাহিদ রানার শিকার ৪৪ রানে ৪ উইকেট। এই দুই তরুণ ছাড়া অভিজ্ঞ তাসকিন আহমেদ ১ উইকেট নিতে খরচ করেন ৪০ রান।
পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭১ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন আগা সালমান। মোহাম্মদ রিজওয়ান করেন ৭৩ বলে ৪৩ রান। সপ্তম উইকেটে তারা যোগ করেন ৫৫ রান। শেষ উইকেট জুটিতে মীর হামজার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ২৭ রানও যোগ করেন সালমান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ২৭৪
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৬২
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ৪৬.৪ ওভারে ১৭২ (আগের দিন ৯/২) (সাইম ২০, মাসুদ ২৮, বাবর ১১, শাকিল ২, রিজওয়ান ৪৩, সালমান ৪৭*, আলি ১, আবরার ২, হামজা ৪; তাসকিন ১০-১-৪০-১, হাসান ১০.৪-১-৪৩-৫, মিরাজ ৮-০-২৪-০, নাহিদ ১১-১-৪৪-৪, সাকিব ৭-২-১৪-০)।
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১৮৫) ৭ ওভারে ৪২/০ (জাকির ৩১*, সাদমান ৯*; হামজা ৩-১-১২-০, শাহজাদ ৩-০-২৩-০, আবরার ১-০-৫-০)