সুপ্রভাত ডেস্ক »
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্য রেখায় অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে চায় ঢাকা। এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে চীনকে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ। আর মূল প্রত্যাবাসন ইস্যুতে তেমন কোনো ‘সুখবর’ নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। পরে বৈঠকে হওয়া আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তিনি। খবর ঢাকা পোস্টের।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মূলত রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলাপ হয়েছে। চীনকে বলেছি, আমাদের সীমান্তের শূন্য রেখায় প্রায় ৫ হাজারের মতো রোহিঙ্গা আছে। আমরা বলেছি, ওদের মিয়ানমারের ভেতরে নিয়ে যাও। কারণ এগুলো এখানে থাকলে আমাদের একটা ভয় থাকে। ওদের শূন্য রেখায় রাখা যাবে না।
মোমেন জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে চীনা দূত আগে বলেছিলেন ‘সুখবর’ দেবেন। কিন্তু আজকের বৈঠকে তিনি কোনো সুখবর দিতে পারেননি।
মন্ত্রী বলেন, আমি তাকে বলেছি, ‘আপনি বলেছিলেন, সুখবর দেবেন।’ জবাবে রাষ্ট্রদূত জানান, তিনি আশা করেছিলেন, কিন্তু এখনও কিছু হয়নি। তিনি শুধু বলেছেন, তারা (মিয়ানমার) এখনো এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে রোহিঙ্গাদের নেওয়ার জন্য, এটাই সুখবর।
ড. মোমেন বলেন, আমরা বলেছি, আপনারা যে প্রজেক্ট নিয়েছেন (ত্রি-পক্ষীয় উদ্যোগ) সেটা অনেক দিন ধরে ঝুলে আছে। এটা ভালো নয়। আমাদের কত আশা, আমরা শুধু চিন্তা করি এ মাসে হবে, ওই মাসে হবে। এজন্য একটা তাগাদা দেওয়া প্রয়োজন। তিনি জানিয়েছেন, তারা (চীন) চেষ্টা করছে। তারা (চীন) তো ওই দেশের মালিক নয়। এ সমস্যা মিয়ানমার করেছে। তাদেরকেই সমাধান করতে হবে। এর বিকল্প কিছু নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগে যে চুক্তি হয়েছে সে অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের নিতে রাজি আছে মিয়ানমার। তারা (মিয়ানমার) বলেছে, তারা (মিয়ানমার) ভেরিফিকেশনের পর রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। তারা এখনও বলছে, ‘আমরা ওদের নিরাপত্তা দিতে রাজি।’ তারা রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করবে, যাতে রোহিঙ্গারা সেখানে স্বেচ্ছায় যেতে পারে।
তবে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিতে কতটা আন্তরিক হবে সেটা নিয়ে শঙ্কায় আছেন মোমেন। তিনি বলেন, এতদিন ধরে যে অবস্থা, মনে হয় না তাদের সে আগ্রহ আছে। এর আগে দুবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু একজন রোহিঙ্গাও ফেরত যায়নি।
পরপর দুবার ব্যর্থ বাংলাদেশ এখন আর রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের দিন তারিখ জনসম্মুখে প্রকাশ করতে চায় না বলে জানান মন্ত্রী।
সাংবাদিকরা জানতে চান রোহিঙ্গাদের প্রথম ব্যাচের প্রত্যাবাসন কবে শুরু হচ্ছে। জবাবে মন্ত্রী বলেন, তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। এখনও কিছু কাজ বাকি, ভেরিফিকেশন বাকি।
এদিকে, সীমান্ত ইস্যু নিয়ে চীনকে জানানোর পর পরিস্থিতি ভালো হয়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে প্রায়ই বোমা আসছিল। আমাদের বর্ডার এলাকার লোক আতঙ্কে ছিল। আমরা সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছি। পরে আমরা চীনের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছি। চীনকে বলার পর বোমাবাজি কমে গেছে।
তিস্তা উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কোনো আলাপ হয়েছে কি না- জানতে চাইলে মোমেন বলেন, এটা আমি জানি না। আজ এটা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আমি কিছুই জানি না। আজ আমার মেজর আলোচনা ছিল রোহিঙ্গা।