শারমিন সুলতানা রাশা »
দৃশ্য : ১
[মঞ্চে একটি টাইম মেশিন ঘুরছে। কাকনের প্রবেশ]
কাকন : বন্ধুরা। তোমাদের মুজিব বর্ষের শুভেচ্ছা। আমি সাইন্টিস্ট কাকন। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে আমি আর আমার বন্ধুরা মিলে একটি টাইম মেশিন বানিয়েছি। আর এই টাইম মেশিনে চড়ে অতীতের যে কোন সময়ে ভ্রমণ করা যায়। আজ আমরা যাবো এখন থেকে অনেক অনেক বছর আগে। তোমরা যাবে তো সাথে? তাহলে তৈরি হয়ে নাও। ততক্ষণে আমি আসাদকে ডেকে নেই! আসাদ! আসাদ!
[মোটা ফ্রেমের চশমা চোখে, লম্বা লম্বা চুল নিয়ে আসাদের প্রবেশ। ]
আসাদ : আমি তৈরি!
কাকন : অ্যাঁ? তৈরি? এ রকম লম্বা লম্বা চুল, নোংরা কাপড়, আবার মোটা ফ্রেমের একটা চশমাও পরেছ! এভাবে যাবে নাকি?
আসাদ : কাকন! আমি যে সাইন্টিস্ট; আমার বন্ধুরা সেটা কী করে বুঝবে?
কাকন : কী করে?
আসাদ : জানো না? দাঁড়াও বন্ধুদের জিজ্ঞেস করি। বন্ধুরা, আমি যে একজন সাইন্টিস্ট তোমরা তো এরই মধ্যে বুঝে গেছ! কিন্তু কি করে বুঝেছ? বলো তো? আমি যে সাইন্টিস্ট তার প্রমাণ কী? হ্যাঁ! ঠিক ধরেছ তোমরা! এই যে লম্বা লম্বা চুল! মোটা ফ্রেমের চশমা এটাই প্রমাণ যে আমি একজন সাইন্টিস্ট!
কাকন : হা হা হা!
আসাদ : তুমি হাসছো? জানো, আমি ভীষণ উৎফুল্ল! দারুণ এক অ্যাডভেঞ্চার হবে! আমরা অতীতে ভ্রমণ করবো! কিন্তু আমরা যাবো কোথায়?
কাকন : গেলেই দেখতে পাবে! এবার চলো। আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে। কি বন্ধুরা, তৈরি তো? চলো সবাই!
[টাইম মেশিনে দুজন চড়তেই বিকট শব্দে টাইম মেশিন ঘুরতে থাকে]
দৃশ্য : ২
সময় : বিকাল
স্থান : স্কুলের খেলার মাঠ।
চরিত্র : মুজিব ও তার খেলার সাথীরা।
[কাকন ও আসাদের প্রবেশ]
আসাদ : কোথায় এলাম আমরা? [স্কুলের সাইনবোর্ড দেখলো, সেখানে লেখা গোপালগঞ্জ মাথুরানাথ ইনস্টিটিউট মিশন স্কুল]
কাকন : ঐ দেখো, একটা স্কুল!
আসাদ : গোপালগঞ্জ মাথুরানাথ ইনস্টিটিউট মিশন স্কুল। ও তার মানে আমরা এখন গোপালগঞ্জে!
কাকন : আসাদ, তুমি কি জান, এই স্কুলটাতে আমাদের দেশের একজন বিশেষ ব্যক্তি পড়াশুনা করেছেন?
আসাদ : কে?
কাকন : বলো তো কে? তুমি তো সাইন্টিস্ট! তোমার জানা উচিত!
আসাদ : তুমি কি ভাব আমি এর উত্তর জানি না? এক্ষুণি বলছি। বন্ধুরা! বন্ধুরা! তোমরা জান? বঙ্গবন্ধু! কি ঠিক বলেছি না?
কাকন : সে তো বন্ধুদের কাছ থেকে জিজ্ঞেস করে বললে! [একটি ফুটবল এসে আসাদের মাথায় পড়লো]
আসাদ : আরে! এটা কোত্থেকে এল?
[একজন কিশোর এসে বলটা নিয়ে গেল। মাঠে কিশোরদল ফুটবল খেলছে । এর মধ্যে একটি কিশোর শেখ মুজিবুর রহমান] [আসাদ চশমা দিয়ে কিশোর দলকে দেখার চেষ্টা করছে]
কাকন : কী ব্যাপার, কী ভাবছো?
আসাদ : ভাবছি, এদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু কোনটা?
কাকন : আমিও তাই ভাবছি। এদের মধ্যে কেউ একজন তো নিশ্চয়ই হবে! [মেঘ ডাকছে]
কাকন : এই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল! চলো চলো! [সকলের প্রস্থান]
দৃশ্য : ৩
সময় : সকাল
চরিত্র : পিন্টু, মন্টু
[ভেজা বই হাতে পিন্টুর প্রবেশ]
পিন্টু : ইশ্! বইটা ভিজে কী একাকার অবস্থা!
মন্টু : ঠিকই বলেছিস! শুধু কী বই? আমার বিছানা বালিশ-তোশক সব বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেছে!
মন্টু : এভাবে চলতে দেয়া যায় না। যে করেই হোক স্কুল-হোস্টেলের ছাদটা মেরামতের ব্যবস্থা করা দরকার।
পিন্টু : কিন্তু আমরা কী করবো? স্যারদের সাথে কথা বললাম ওনারা বললেন ছাদ মেরামতের জন্য যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন, স্কুল ফান্ডে তা নেই।
মন্টু : কিন্তু কিছু তো একটা করতেই হবে! কি করা যায়?
মন্টু : উপায় তো একটা হবেই!
দৃশ্য : ৪
স্থান : গাছতলা
সময় : সকাল
[মুজিব ও তার স্কুলের সহপাঠীরা সভা করছে]
মুজিব : সবই তো শুনলাম। কিন্তু হোস্টেলের ছাদটা মেরামত করার জন্য অনেক টাকা লাগবে। এত টাকা তো এক্ষুণি জোগাড় করা সম্ভব নয়। দেখি কি করা যায়। [মুজিব খেয়াল করলো তার সহপাঠী মোতালেবের মন খারাপ]
মুজিব : মোতালেব? তুমি কিছু বলছো না যে?
মোতালেব : কী আর বলবো! আমার তো এখনও পরীক্ষার ফিসও জোগাড় হয়নি। পরীক্ষায় বসতে পারবো কিনা তাও জানি না।
[মুজিব আনমনে কি ভাবলো]
মুজিব : আজ তো রবিবার। তাই না?
পিন্টু : ও হ্যাঁ!
একসঙ্গে : আজ রবিবার!
(বাকী অংশ আগামী সংখ্যায়)