শিল্পকলা একাডেমিতে উপদেষ্টা ফারুক ই আজম : মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে

সুপ্রভাত ডেস্ক »

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক বলেছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা এখন জীবন সায়াহ্নে। তাদের কোন চাওয়া পাওয়া নেই, তাই কোন বিভাজনও থাকতে পারে না। জীবনের এ পর্যায়ে এসে সমাজের জন্য অনুকরণীয় আদর্শের জীবন তাদের গড়তে হবে যেন সন্তানেরা গর্ব করে জাতির সামনে তা তুলে ধরতে পারে।

তিনি বলেন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায়, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণœ রাখতে এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

উপদেষ্টা শুক্রবার (১৫ আগস্ট) নগরীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. ক. (অব.) মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন আহমেদ বীর উত্তম এর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ড এ সভার আয়োজন করে।

ইউনিট আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মিজানুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহানগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ইকরামুল করিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. তালুকদার মাহফুজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফাহিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মহব্বত খান, প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের রেক্টর ইমাম হাসান রেজা, ভাইস প্রিন্সিপাল ফিরোজ আহমেদ এবং পরিবারের পক্ষে ভাই ডা. ফরহাদ, বড় ছেলে জাবেদ, মেঝ ছেলে জাহেদুর রহমান ও মেয়ে ইফফাত জাহান স্মৃতিচারণমূলক বক্তৃতা করেন।

বক্তারা বলেন, লে. ক. জিয়া উদ্দিন আহমেদ ছিলেন তেজস্বী পুরুষ। নিভৃতচারী ও প্রচার বিমুখ মানুষ ছিলেন তিনি। তবে যখনই মানুষের অধিকার ভূ-লুণ্ঠিত হয়েছে, যখন মানুষ শোষণ আর বঞ্চনার শিকার হয়েছেন তখন কর্নেল জিয়াউদ্দিন প্রতিবাদ করেছেন। ব্যানার হাতে একাকি রাস্তায় নেমে পড়েছেন, কারো রক্তচক্ষুকে ভয় পাননি। তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে লে. ক. জিয়াউদ্দিন ৩টি সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন, দেশ স্বাধীন করেছেন।

তবে মানুষের মুক্তির আন্দোলন কখনোই তিনি ত্যাগ করেননি। তাই স্বাধীনতার পর মানুষের অধিকার ভূ-লুণ্ঠিত হতে দেখে তিনি আবারো প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছেন, নিবন্ধ লিখে চাকরি হারিয়েছেন। তারা বলেন, মরহুম জিয়া উদ্দিন যেভাবে পাকিস্তান সেনাঘাটি থেকে মেজর মঞ্জুর, মেজর তাহের ও মেজর পাটওয়ারিকে নিয়ে দেশ মাতৃকার টানে পালিয়ে এসেছেন, বিভিন্ন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন তা পাঠ্য পুস্তকে থাকা উচিত।

উপদেষ্টা বলেন, দেশে অনিবার্যভাবে নির্বাচন হবে। উৎসবমুখর পরিবেশে মানুষ ভোট দিতে প্রস্তুত। সবাই উৎসবমুখর নির্বাচন দেখতে চায়, ভোট দিয়ে দেশের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করতে, নিজের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায়। জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে মুক্তিযোদ্ধাদের দায়িত্ব অনেক। তাদেরকে জাতির স্বার্থে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। নতুন প্রজন্মকে সঠিক পথ দেখাতে হবে।

তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় মানুষকে অধিকার না দেওয়া, বেধে রাখার চেষ্টা ও প্রবণতা ছিল। তবে এখন বাধ খুলেছে, সবদিকে কলরব উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে। এটা অব্যাহত রাখতে হবে। উপদেষ্টা বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে। সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধে শহিদ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এসময় সকল শহিদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়