নিজস্ব ক্রীড়া প্রতিবেদক
ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে গোলউৎসব! অনেকটা অবিশ^াস্য মনে হলেও গতকাল নিজ ৭ম খেলায় পাঁচ গোলের ব্যবধানে মাদারবাড়ী উদয়ন সংঘের কাছে পরাজিত হয়ে শিরোপা’র দৌঁড় থেকে ছিটকে গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। উদয়নের আকাশ ও ফয়সাল ২টি করে এবং তানিন সরকার ১টি গোল করেন। এনিয়ে ব্রাদার্স টানা তিন খেলায় পরাজয়ের স্বাদ পেল। এ পর্যন্ত একমাত্র উদয়ন সংঘই অপরাজিত আছে। দিনের অপর খেলায় কোয়ালিটি স্পোর্টস ক্লাব রোমোনের গোলে চসিক একাদশকে হারিয়ে লড়াই ও জয়ের ধারায় ফিরেছে। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত জিপিএইচ ইস্পাত সিজেকেএস-সিডিএফএ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে রোববার ছিল দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলা। এতে বিশাল জয় পাওয়া উদয়ন সংঘ ৭ খেলা শেষে সর্বোচ্চ ১৫ পয়েন্ট নিয়ে এখন শিরোপা’র কাছেই পৌঁছে গেছে। তাদের বাকি দুই প্রতিপক্ষ অপেক্ষাকৃত দূর্বল কাস্টমস ক্লাব ও বিসিআইসি ক্রীড়া সংসদ। আর ৭ খেলায় ১৪ পয়েন্ট পাওয়া কোয়ালিটি’র খেলা বাকি ব্রাদার্স ও কাস্টমস ক্লাবের সাথে। ৭ খেলা শেষে ব্রাদার্সের ১২ ও চসিক একাদশের ১১ পয়েন্ট।
এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে বিকেলে ৩৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে রোমানের গোলে কোয়ালিটি স্পোর্টস এগিয়ে যায় (১-০)। লাফিয়ে উঠে হেড করতে গেলে চসিকের একজন ডিফেন্ডার কোয়ালিটি’র ফরোয়ার্ডকে ধাক্কা দিলে রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের ৩৫ মিনিটে চসিক একাদশকে পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত করেন রেফারি শরিফুজ্জামান টিপু। পেনাল্টি বক্সে বল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথে চসিকের জাহেদুলকে প্রতিপক্ষের একজন ডিফেন্ডার অবৈধভাবে বাঁধা দিয়ে ফেলে দেন, কিন্তু রেফারি তা এড়িয়ে যান। চসিক একাদশের খেলোয়াড়রা পেনাল্টির দাবি করতে থাকেন। এ সময় প্যাভিনিয়ন থেকে চসিক সমর্থকরা মাঠে পানির বোতল ছূড়তে থাকে। খেলা শেষে তারা মাঠের ফটক ভেঙ্গে ঢুকতেও চেষ্টা করে। এতে রেফারিরা মাঝমাঠে নিরাপদ স্থানে গিয়ে অবস্থান নেন। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত হলে রেফারিরা উঠে আসেন। এর আগে এ অর্ধের ১৪ মিনিটে স্টপার রফিকুলের দূরপাল্লার দুর্দান্ত ফ্রি-কিক কোয়ালিটি কিপার নাইম মিয়া ফিস্ট করে প্রতিহত করলে সমতায় ফিরতে পারেনি চসিক। আরেকবার ৩০ মিনিটে অধিনায়ক বোরহানউদ্দিন বামপ্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে বিপজ্জনক শট নিয়ে বল সাইডবার ঘেষে বাইরে চলে যায়। শেষ মুহূর্তে আবারো বোরহানের ক্রসে জাহেদের ব্যাকভলি নাইম কর্নার করে বিপদমুক্ত করলে চসিকের প্রথম পরাজয় নিশ্চিত হয়।
ম্যাচসেরা তানিন সরকারের হাতে ক্রেস্ট ও নগদ এক হাজার টাকা তুলে দেন সিজেকেএস কাউন্সিলর আবদুল মান্নান রানা।
উদয়ন-ব্রাদার্স
দু’দলের এ খেলায় অপ্রত্যাশিত ফলাফল হয়েছে বলতে ভুল হবে না। আগের দুই খেলায় পরাজয়ে অনেকটা হতাশায় ছিল ব্রাদার্স। গতকালও এ বৃত্ত থেকে তারা বের হতে পারেনি। খেলায় উদয়ন ৫ গোল আদায় করলেও আরো কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া না হলে হয়তো কমলা জার্সি দলের পরাজয় আরো শোচনীয় হতো। ছন্দে থাকা উদয়ন সংঘের সিরিজ আক্রমণে ব্রাদার্সের রক্ষনভাগ একেবারেই ভেঙ্গে পড়ে। ফলশ্রুতিতে গোলউৎসবে মেতে উঠে আনোয়ারের শিষ্যরা। তৃতীয় মিনিটে গোলের সূচনা করেন ফয়সাল (১-০)। দুই মিনিট পর ব্যবধান ২-০ করেন ফয়সাল। অব্যাহত আক্রমণে থেকে শেষ দিকে ১৭ মিনিটের ব্যবধানে ব্রাদার্সের জালে আরো ৩ বার বল পাঠাতে সক্ষম হয় উদয়ন সংঘ। ৬৮ মিনিটে বামপ্রান্ত দিয়ে ঢুকে বাঁ পায়ের শটে নিজ দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোল করেন ফয়সাল (৩-০)। ৮২ ও ৮৫ মিনিটে পরপর দুই গোল করেন আকাশ (৫-০)। এরমধ্যে প্রথমটা নাহিয়ানের পাস থেকে ও দ্বিতীয়টা কিপারের মাথার উপরে জালে প্লেস করেন।
ম্যাচসেরা কোয়ালিটির রাসেলের হাতে ক্রেস্ট ও নগদ এক হাজার টাকা তুলে দেন সাবেক কৃতি ফুটবলার নন্দী রাম লাল লাতু। আজকের খেলা: চট্টগ্রাম বন্দর ক্রীড়া সমিতি-কাস্টমস ক্লাব (৩টা)।