চট্টগ্রামে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিন গড়ে ১১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। সেখানে পাওয়া যায় ৮০০ থেকে ৮৫০ মেগাওয়াট। এ কারণে লোডশেডিংয়ের ঘটনা ঘটছে।
চট্টগ্রাম জেলায় বেশ কিছুদিন ধরে লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি চলছে। বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে। গরম বাড়তে থাকায় লোডশেডিংও বাড়ছে। বাড়ছে বিদ্যুৎ নিয়ে মানুষের কষ্টও।
চট্টগ্রামে ছোট-বড় ২৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। এর মধ্যে ১৩টি কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। বেশিরভাগই গ্যাস ও জ্বালানি তেলের অভাবে বন্ধ রয়েছে। এর মাঝে কাপ্তাই লেকের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানির অভাবে ৪টি ইউনিট বন্ধ রয়েছে।
এদিকে চালু রয়েছে ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১২৫৮ মেগাওয়াট। কিন্তু এসব কেন্দ্র থেকে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৬৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এর মধ্যে খুঁড়িয়ে চলছে ৬টি। অপরদিকে উৎপাদন ক্ষমতার অর্ধেক উৎপাদনে চলছে ৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
পিডিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের উৎপাদন তালিকার তথ্য মতে, কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে ৪টি ইউনিট বন্ধ রয়েছে। এখন মাত্র ১ নম্বর ইউনিটে (৪৬ মেগাওয়াট) ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪২০ মেগাওয়াটের ২টি (প্রতিটি ২১০ মেগাওয়াট করে) বিদ্যুৎ কেন্দ্র দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। শিকলবাহা ২২৫ মেগওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ রয়েছে অনেক দিন ধরে। একই সাথে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিও অনেক দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টটিও অনেক দিন থেকে বন্ধ। ২৪ মেগাওয়াটের রিজেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ রয়েছে। ১০০ মেগাওয়াটের এনার্জি প্যাক বন্ধ। এদিকে বছরের পর বছর ধরে টেকনাফ সোলার প্ল্যান্ট ও কাপ্তাই সোলার প্ল্যান্ট বন্ধ রয়েছে।
চালু আছে কাপ্তাই ১ নম্বর ইউনিট। এটির উৎপাদন ক্ষমতা ৪৬ মেগাওয়াট। কিন্তু এখন উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট। এদিকে শিকলবাহা জুডিয়াক পাওয়ার প্ল্যান্টে ৫৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। দোহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টে ৭৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। ৫০ মেগাওয়াটের ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে নামমাত্র ১৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। ৩০০ মেগাওয়াটের জুলধা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ১৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। ২৬ মেগাওয়াটের আরপিসিএল পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
এদিকে ৫০ মেগাওয়াটের বারাকা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে নামমাত্র ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। ১০৫ মেগাওয়াটের শিকলবাহা বারাকা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। ১১০ মেগাওয়াটের বারাকা কর্ণফুলী বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নামমাত্র ৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। ৩০০ মেগাওয়াটের ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে অর্ধেকেরও কম মাত্র ১৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। ১১৬ মেগাওয়াটের আনলিমা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে শুধুমাত্র ২১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
প্রচ- তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এর মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিং মানুষের দুর্ভোগের মাত্রাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
লোডশেডিংয়ের কবলে চট্টগ্রাম
২৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে ১৩টি কেন্দ্র বন্ধ