লবণের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় চাষিরা হতাশ

লবণ উৎপাদনের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা

এস এম জুবাইদ, পেকুয়া »

চাষিরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে মাঠ থেকে উৎপাদন করছে কাঁচা লবণ। আর এ উৎপাদিত কাঁচা লবণ বিক্রি করে উৎপাদন খরচের চেয়ে মণ প্রতি ২০০ টাকা কম পাচ্ছে। এ অবস্থায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন কক্সবাজারের পেকুয়া-কুতুবদিয়ার চাষিরা। পেকুয়া-কুতুবদিয়াসহ জেলায় প্রায় ৪০ হাজারের চেয়ে বেশি রয়েছে লবণ চাষি। সৃষ্ট পরিস্থিতির জন্য সিন্ডিকেটকে দুষছেন চাষিরা।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) তথ্যমতে, কক্সাবাজারের পেকুয়া উপজেলায় ১০ হাজার ২৩৫ একর এবং কুতুবদিয়া উপজেলায় প্রায় ৬ দশমিক ৭৫৮ একর জমিতে লবণ চাষ হচ্ছে। তবে সারা দেশে চলতি মৌসুমে প্রায় ৬৮ হাজার ৫ শত ৫ একর জমিতে লবণ উৎপাদন হচ্ছে। গেল অর্থ বছরে লবণের জাতীয় চাহিদা ছিল প্রায় ২৬ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া, মগনামা, রাজাখালী, পেকুয়া সদর আংশিক, টইটং আংশিকসহ ৫টি ইউনিয়নে লবণ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে তিনটি ইউনিয়ন লবণ শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। তাছাড়া বাঁশখালীসহ চট্টগ্রাম জেলার আংশিক এলাকায় লবণ উৎপাদন হচ্ছে। কুতুবদিয়া, মহেশখালী, চকরিয়া, কক্সবাজার সদর, ঈদগাই, টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার আংশিক স্থানেও লবণ উৎপাদন হয়। এসব এলাকার লবণ চাষিরা বলছেন, এ অঞ্চলে গত অর্থ বছরে ৪০ শতক জমির আগাম মূল্য ছিল ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। শ্রমিকের মজুরিও ছিল তুলনামূলক কম।

এ বছর দুই খাতেই খরচ বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। জমির আগাম মূল্যের জন্য প্রতি বিঘায় খরচ দিতে হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। বেড়েছে সেচ-পানির দাম, বেড়েছে লবণ উৎপাদনের ব্যবহৃত পলিথিনের দাম। সবকিছুর দাম বাড়লেও কাঁচা লবণের দাম হ্রাস পাওয়ায় আর্থিক লোকসানের কারণে হতাশা বোধ করছেন চাষিরা।

গেলো অর্থ বছরের তুলনায় কেজি প্রতি ৮ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত কমেছে কাঁচা লবণের দাম। মগনামা ইউনিয়নের লবণ চাষি আহমদ উল্লাহ বলেন, চলতি মৌসুমে প্রতি কেজি লবণ বিক্রি হচ্ছে ৪ থেকে ৫ টাকায়। সেই হিসেবে প্রতি মণ কাঁচা লবণ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত বছরে প্রতি কেজি কাঁচা লবণের মাঠে দাম ছিল ১২ থেকে ১৩ টাকা। প্রতি মণ ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা ছিল। গত অর্থ বছরের তুলনায় এ বছর দরপতন অর্ধেকের চেয়ে বেশি।

রাজাখালী চরিপাড়ার লবণ চাষি মোহাম্মদ আলম বলেন, লবণ চাষ নিয়ে আমরা ভালো নেই। এমনি ঘনকুয়াশাসহ খারাপ আবহাওয়ার কারণে মাঠে লবণ কম দেখা যাচ্ছে। সঙ্গে ন্যায্য দামও নেই। আমরা এতো পুঁজি

লবণ শিল্পের উন্নয়ন কার্যালয় কক্সবাজারের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো.জাফর ইকবাল ভূঁইয়া বলেন, গত নভেম্বর মাসের শুরুর দিকে লবণ উৎপাদন শুরু হয়েছে। জেলার কিছু উপজেলায় চাষিরা আগাম মাঠে নেমেছে। কিছু এলাকায় মাঠ প্রস্তুতি চলছে। মূলত বিসিক লবণের দাম নির্ধারণ করে না, দামটা চাষি এবং ব্যবসায়ীদের ওপর নির্ভর করে।