রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন উখিয়ায় নিহত ২

Ι পুড়ল সাড়ে ৪শ বসতঘর Ι

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ও পটিয়া প্রতিনিধি »

কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ১ নং পাহাড়ের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এ ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু ও রোহিঙ্গাদের ৪৭০ ঝুপড়ি বসতঘর এবং তিনটি এনজিও অফিস পুড়ে গেছে। এছাড়া আরও ১৫০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। গতকাল মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১টার দিকে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং এলাকার লম্বাশিয়া ১-ওয়েস্ট ক্যাম্পের সি-ব্লকে এই ঘটনা ঘটে।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের উপপরিচালক মো. তানহারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুপুরে লম্বাশিয়া ১-ওয়েস্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি বসতঘরে আকস্মিক আগুন লাগে। আগুন ক্যাম্পটির এক থেকে পাঁচ নম্বর সাব ব্লকে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে ৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালায়। পরে সেখানে কক্সবাজার ও টেকনাফ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের আরও ৫টি ইউনিট যোগ দেয়। বাতাস থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা। বেলা পৌনে ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানিয়েছেন তিনি। স্থানীয়দের বরাতে তিনি বলেন, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট অথবা রান্নার কাজে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ কাজ করছে।
উপপরিচালক মো. তানহারুল ইসলাম আরও বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া আগুনে প্রাথমিকভাবে ৪৭০টি বসতঘর ও কয়েকটি স্থাপনা সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। তদন্তকাজ শেষে চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।
ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা অফিস ও রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতারা বলছেন, ৫টি ব্লকে পাঁচ হাজার ৪৭৫ জন রোহিঙ্গার বসবাস রয়েছে।
স্থানীয়দের বরাতে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ হোসাইন বলেন, দুপুরে লম্বাশিয়া ১-ওয়েস্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ব্লকের একটি বসতঘরে আকস্মিক আগুন লাগে। আগুন ক্যাম্পটির আশপাশের বসতঘরসহ অন্যান্য স্থাপনায় মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে ৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালায়। পরে সেখানে কক্সবাজার ও টেকনাফ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের আরও কয়েকটি ইউনিট যোগ দেয়। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকেরা। এছাড়া প্রতি বছর শীত মৌসুম আসলেই ক্যাম্পে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।
রান্না ঘরের চুলার আগুনে পটিয়ায় নি:স্ব পাঁচ পরিবার
পটিয়া প্রতিনিধি জানায়, রান্না ঘরের চুলার আগুনে পটিয়ায় নিঃস্ব হয়েছে পাঁচ পরিবার। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের থানা মহিরা গ্রামের হাজী বদি মেম্বারের বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হয়েছে মোহাম্মদ আজগর, নুরুল আমিন, নুরুল হক, ফজলুল হক ও মাফুলা আকতারের ঘর। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৮লাখ টাকা।
জানা গেছে, উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের বদি মেম্বারের বাড়িতে রান্না ঘরের চুলার আগুন থেকে সৃষ্ট আগুনে পুড়ে গেছে ৫ পরিবারের নগদ টাকা, আসবাব পত্র। ঘটনার পর পটিয়া ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগে পুড়ে ছাই হয়ে যায় বসতঘর।
স্থানীয় বাসিন্দা নাজিম উদ্দিন জানিয়েছেন, রান্না ঘরের চুলা থেকে সৃষ্ট আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণে তাদের এলাকার ৫টি ঘর পুড়ে গেছে। আগুনে ৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।