রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাড়ছে এইচআইভি সংক্রমণ

গত এক বছরের নতুন আক্রান্ত এইচআইভি রোগীদের মধ্যে ২১৭ জন রোহিঙ্গা। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অতিরিক্ত ভিড়, সীমিত স্বাস্থ্যসেবা এবং দুর্বল এইচআইভি প্রতিরোধ কর্মসূচির কারণে এই সংক্রমণ বাড়ছে।
কক্সবাজারে কাজ করা সংস্থাগুলো জানাচ্ছে, বিদেশি অর্থায়ন কমে যাওয়ায় এইচআইভি টেস্টিং কভারেজ কমে গেছে এবং অনেক সংক্রমণ অজানা রয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

বাংলাদেশে ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এক বছরে দেশে নতুন করে ১ হাজার ৮৯১ জন এইচআইভি রোগী শনাক্ত হয়েছেন; যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় বার্ষিক বৃদ্ধি। এই পরিমাণ নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।

ন্যাশনাল এইডস/এসটিডি কন্ট্রোল প্রোগ্রামের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এক বছরে নতুন করে ১ হাজার ৮৯১ জন এইচআইভি রোগী শনাক্ত হয়েছেন, আর এইডস-সম্পর্কিত মৃত্যু হয়েছে ২৫৪ জনের। এতে ১৯৮৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট এইডসজনিত রোগে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৬৬ জনে।
২০২৫ সালে বাংলাদেশে এইচআইভি নিয়ে বেঁচে আছেন আনুমানিক ১৭ হাজার ৪৮০ জন। এই প্রাদুর্ভাব সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এখনও ০.০১ শতাংশের নিচে। তবুও সংক্রমণের হার বিশেষ জনগোষ্ঠীর মধ্যে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। এর মধ্যে রয়েছেন- যারা ইনজেকশনের মাধ্যমে নেশা করেন (পিডব্লিউআইডি) এবং যারা পুরুষ হয়ে পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করেন (এমএসএম)।

এ বিষয়ে ন্যাশনাল এইডস/এসটিডি কন্ট্রোল প্রোগ্রাম কিছু সুপারিশ করেছে। তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশের অনেক সরকারি হাসপাতালে এইচআইভি চিকিৎসার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এছাড়াও কমিউনিটি সংগঠনের দুর্বল সমন্বয়, সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব এবং এইচআইভি আক্রান্তদের নিয়ে সামাজিক কলঙ্ক বড় বাধা হয়ে আছে। এই বাধাগুলো প্রতিরোধ ব্যাহত করছে এবং চিকিৎসা শুরুর সময় দেরি করাচ্ছে, বিশেষ করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে। এজন্য দরকার সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া। রোহিঙ্গারা দেশে বহু সমস্যার কারণ হয়ে উঠছে। এটা তার মধ্যে ভয়াবহতম।