সুপ্রভাত ডেস্ক :
কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১ জনে দাঁড়িয়েছে।মঙ্গলবার বিকালে কক্সবাজারে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে দুর্যোগ ও ত্রাণ সচিব মো. মহসিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ে এই ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
ত্রাণ সচিব মো. মহসীন আরো জানান, অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে রোহিঙ্গাদের ৯ হাজার ৩০০ বসত ঘর। প্রায় ৪৫ হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে ১১ জন মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সচিব আরো জানান, আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের একজনকেও যেন না খেয়ে থাকতে না হয় সে জন্য সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা সহ জাতি সংঘের বিভিন্ন সংস্থা সরকারের সাথে কাজ করছে।
মো. মহসীন বলেছেন, ঘটনার তদন্তে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজোয়ান হায়াত প্রধান করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন। তারা আগুনের সূত্রপাত সহ অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখবে। পুরো ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজোয়ান হায়াত জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডে রোহিঙ্গাদের ৪টি ক্যাম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুনে পুড়ে গেছে ৯ হাজার ৩ শত বসত ঘর। পুড়ে গেছে বিদেশি সংস্থা পরিচালিত ৩টি হাসপাতাল ও পুলিশের একটি ব্যারাক। তিনি জানান- আগুনের সুত্রপাত সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সমন্বয়কারী ইন্টার সার্ভিস কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের (আইএসসিজি) যোগাযোগ ও গণসংযোগ কর্মকর্তা সাইয়েদ মো. তাফহীম জানান, ‘অগ্নিকাণ্ডে ১১ জনের প্রাণহানির খবর প্রাথমিকভাবে পাওয়া যাচ্ছে। এ ঘটনায় অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। প্রায় দশ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিবারের ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। পাশপাশি হাসপাতাল, বিতরণ কেন্দ্র শিখন কেন্দ্র, মহিলা বান্ধব পরিষেবাসহ প্রয়োজনীয় সুবিধাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
সোমবার বিকেল ৩টায় বালুখালী ৮-ডব্লিউ নম্বর ক্যাম্পে প্রথমে আগুন লাগে। পরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে লাগোয়া ৮-এইচ, ৯, ১০ ও ১১ নম্বর ক্যাম্পে। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বাতাসের গতিবেগ বেশি হওয়ায় আগুন দ্রুত পার্শ্ববর্তী ক্যাম্পগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।
ক্যাম্পে আগুন লাগার পর পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী আবুল কাশেম উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।