সালাহ উদ্দিন সায়েম :
চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের স্বস্তি দিতে স্থাপন করা হচ্ছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম।
১৯৮৭ সালে ৮০টি শয্যা নিয়ে চিকিৎসাসেবার যাত্রা শুরু করা চট্টগ্রামের এই হাসপাতালে গতকাল সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
২২ মে জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ করোনা রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার্থে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে।
গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেনারেল হাসপাতালের কর্মকর্তাদের সাথে এক ভিডিও কনফারেন্সে এই প্রকল্প অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. শফিকুল ইসলাম সুপ্রভাতকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট রয়েছে। আর বেসরকারিভাবে পাহাড়তলী ইম্পেরিয়াল হসপিটালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট রয়েছে।
চট্টগ্রামের দ্বিতীয় বৃহত্তম সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান জেনারেল হাসপাতালে ১০০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় এ হাসপাতালে সম্প্রতি ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে।
জানা গেছে, হাসপাতালটিতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম না থাকায় আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এখন সিলিন্ডার অক্সিজেন দিয়ে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।
জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন করতে কমপক্ষে ১ মাস সময় লাগবে। এই প্রকল্পের ব্যয় ৪-৫ কোটি টাকা হতে পারে।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবির সুপ্রভাতকে জানান, একজন রোগীর ফুসফুসে যখন করোনা আক্রান্ত করে তখন তিনি শ্বাস নিতে পারেন না। মনে হয় পানিতে ডুবে যাচ্ছেন। সেই সময় তার প্রয়োজন হয় অক্সিজেন। কিন্তু একটা অক্সিজেন একজন রোগীকে ৪-৬ ঘণ্টা সাপোর্ট দিতে পারে। এতে একজন রোগীর প্রয়োজন হয় দিনে ৪-৬ টি সিলিন্ডার। প্রতিবার সিলিন্ডার পরিবর্তনের কারণে রোগীকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। কিন্তু যদি কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা থাকে তাকে এই ভোগান্তিতে পড়তে হয় না।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা হাসপাতালগুলোতে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা থাকাটা খুবই জরুরি।
জাতীয় রোগ তত্ত্ব , রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা প্রফেসর ডা. তাহমিনা শিরীন সুপ্রভাতকে বলেন, কোভিড-১৯ ভাইরাসটি প্রথমে শ্বাসনালীকে আক্রান্ত করে। এরমধ্যে কিছু রোগীর মারাত্মক নিউমোনিয়া হয়। এই নিউমোনিয়ার কারণে তাদের ফুসফুস অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে না। তখনই অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। অক্সিজেন গ্রহণের ক্ষমতা কমতে থাকে ফুসফুসের। সেই সময় নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেনের খুবই প্রয়োজন হয়।
এ মুহূর্তের সংবাদ