সুপ্রভাত ডেস্ক »
আজ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বেগম রোকেয়া দিবস। বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী।
নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অধিকার ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় বেগম রোকেয়ার অবদান ও নারী জাগরণের অগ্রযাত্রায় অন্তহীন প্রেরণার উৎস হিসেবে তাঁর জন্ম ও মৃত্যু দিবস স্মরণে প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়।
নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় এ বছর পাঁচ জন বিশিষ্ট নারীকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বেগম রোকেয়া পদক দেওয়া হচ্ছে।
দিবসটি উপলক্ষে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, নারী-পুরুষের সমতার দাবি নিয়ে কলম আন্দোলনের মাধ্যমে উপমহাদেশের নারীদের জীবন পরিবর্তনের ধারা সূচনা করেছিলেন মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার মাধ্যমেও তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নারীর দুঃখ-দুর্দশা ও সমান অধিকারের দাবি বেগম রোকেয়ার সাহিত্যে জোরালোভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করেছে। পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) বিধিমালা ২০১৩, ডিএনএ আইন ২০১৪ এবং নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৩-২০২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে এসব পদক্ষেপ মাইলফলক হয়ে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, বেগম রোকেয়ার জীবনাচরণ ও নারী শিক্ষার প্রসারে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন আধুনিক নারী।
তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এশিয়ার দেশগুলোর শীর্ষে। জন্ডার সমতা সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অবস্থান আজ বিশ্বে সপ্তম। স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের প্রায় ৭০ শতাংশ নারী, তৈরি পোশাক কর্মীদের ৮০ শতাংশের বেশি নারী। বর্তমানে সংরক্ষিত আসন ও নির্বাচিত ২২ জনসহ ৭২ জন নারী সংসদ সদস্য রয়েছেন। স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচিত নারী প্রতিনিধির সংখ্যা ১০ হাজারের অধিক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আমি বাঙালি নারী শিক্ষার প্রসার ও নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। এ বছর যারা ‘বেগম রোকেয়া পদক’ পেয়েছেন আমি তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
এ বছর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বেগম রোকেয়া পদকের জন্যে মনোনীতরা হলেন : শিক্ষায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য খালেদা একরাম, মরণোত্তর (ঢাকা জেলা); নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় ডা. হালিদা হানুম আখতার (রংপুর জেলা); নারীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে কামরুন্নেছা আশরাফ দিনা, মরণোত্তর (নেত্রকোনা জেলা); নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণে নিশাত মজুমদার (লক্ষ্মীপুর জেলা) এবং পল্লি উন্নয়নে রনিতা বালা (ঠাকুরগাঁও জেলা)।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পদক প্রদান করবেন।
উল্লেখ্য, বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের মিঠাপুকুর থানার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্ম নেন। সমাজ সংস্কারক এই নারীর মৃত্যু হয় ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর।