রেলওয়ের ইঞ্জিন সংকট কাটবে কবে

ইঞ্জিন সংকটে ট্রেনের যাত্রা বাতিলের কারণে প্রায় সময় যাত্রীরা স্টেশনে বিক্ষোভ করেন। কয়েকদিন আগে কক্সবাজার থেকেও একটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়। এ ঘটনা নতুন নয়। প্রায় সময় মাঝপথে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, গত ১৮ জুন পাহাড়তলী স্টেশনে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়। বিকল্প ইঞ্জিন না থাকায় পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে মেকানিক এনে ইঞ্জিনটি ঠিক করা হয়।
গত ১৮ জুন তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ফৌজদারহাট যাওয়ার পর ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। পরে রিলিফ ইঞ্জিন গিয়ে ট্রেনটিকে নিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে কয়েক ঘণ্টা বিলম্ব করে। ১৮ জুন ঢাকাগামী গোধূলি এক্সপ্রেস ট্রেন হাসানপুর স্টেশনে গিয়ে ইঞ্জিন বিকল হয়। ১৯ জুন ঢাকা–কক্সবাজার রুটের পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন মন্দবাগ স্টেশনে যাওয়ার পর বিকল হয়। ১৯ জুন কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়। ২২ জুন পর্যটক ট্রেনের ইঞ্জিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে নষ্ট হয়ে যায়। ২২ জুন প্রবাল ও সৈকত ইঞ্জিনের ওয়াটার লিকেজ–জনিত কারণে ট্রেন দুটির যাত্রা বাতিল করা হয়।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে মাঝপথে যাত্রীবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন বিকলের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে এবং যা দিনদিন আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। যার জন্য ঘটছে শিডিউল বিপর্যয়ের মতো ঘটনা এবং এতে ট্রেনের যাত্রাও বাতিল হচ্ছে। এছাড়া ইঞ্জিন সংকটে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বারবার যাত্রীবাহী ট্রেনের ‘যাত্রা বাতিল’ হচ্ছে। এর ফলে মাঝপথে শত শত ট্রেনযাত্রীকে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

পূর্বাঞ্চলে যাত্রীবাহী ট্রেনের জন্য প্রতিদিন প্রয়োজন ৭২টি ইঞ্জিন, কিন্তু কার্যত মিলছে মাত্র ৫৩টি। ফলে একদিকে বিশ্রাম ও রক্ষণাবেক্ষণের সুযোগ না পেয়ে দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ইঞ্জিনগুলো। যার কারণে মাঝপথে যাত্রীসহ ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে পড়ার ঘটনা ঘটছে। মাঝপথে ইঞ্জিন বিকলের ঘটনায় শিডিউল বিপর্যয়ের পাশাপশি যাত্রা বাতিলের ঘটনাও ঘটছে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে। অন্যদিকে প্রতিটি ট্রেন ছাড়ছে এক থেকে দেড় ঘণ্টা দেরিতে।

গত এক মাসে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ১০ থেকে ১২টি যাত্রীবাহী ট্রেনের মাঝপথে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়েছে বলে জানান বেশ কয়েকজন ট্রেন চালক।
রেলওয়ে ইঞ্জিন সংকটে ভুগছে অনেকদিন ধরে। ধরতে গেলে এখন সিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনা নৈমিত্তিক হয়ে উঠেছে। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কী ভাবছে জানি না। আমরা বুঝতে পারি না, রেলের মতো জনপ্রিয় এ গণপরিবহনকে রুগ্ন করে রাখা হচ্ছে কার বা কাদের স্বার্থে।