মৃতপ্রায় এক হাসপাতালের নাম রেলওয়ে বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। চট্টগ্রাম মহানগরীর সিআরবি এলাকায় এই জরাজীর্ণ হাসপাতালটির অবস্থান। দীর্ঘদিন ধরে প্রায় অচল অবস্থায় রয়েছে। তবে করোনা মহামারির সময় করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান হয়েছিলো হাসপাতালটিতে। প্রায় বন্ধ হাসপাতালটি নতুনভাবে প্রাণ ফিরে পাবার একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
জেলা প্রশাসন হাসপাতালটি নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মচারী কল্যাণ হাসপাতালে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে গত শনিবার হাসপাতালটি পরিদর্শন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক।
সরকারি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনায় সাফল্যের ধারাবাহিকতায় মাঠ পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে একটি বিশেষায়িত হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ চট্টগ্রাম বিভাগে কর্মচারীদের উন্নত চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য কোনো হাসপাতাল নেই। অথচ চট্টগ্রাম মহানগর একটি বিভাগীয় শহর। এখানে সরকারি সকল দপ্তরের কার্যালয় অবস্থিত। এ জন্য বিপুল সংখ্যক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবার-পরিজন নিয়ে এ শহরে বসবাস করেন। সরকারি এসব কর্মচারীদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য বিশেষায়িত কোনো হাসপাতাল না থাকায় বেশির ভাগ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের স্বজনেরা উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা থেকে অনেকটা বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি ভোগান্তি ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ইতোমধ্যেই দেশের সকল বিভাগে বিভাগীয় কর্মচারী হাসপাতাল নির্মাণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম বিভাগেও বিভাগীয় কর্মচারী হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নিজস্ব হাসপাতাল বাস্তবায়ন দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সিআরবি রেলওয়ে হাসপাতালকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মচারী হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগে জরাজীর্ণ হাসপাতালটি নতুন প্রাণ ফিরে পাবে। নতুন করে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে না বিধায় অবকাঠামোগত উন্নয়নে দ্রুত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতকরণ করা হবে। এরফলে সরকারের বিপুল অর্থ সাশ্রয় হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, তাদের পরিবার-পরিজন, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবার, মৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিবার, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাসপাতালে অগ্রাধিকারভিত্তিতে চিকিৎসাসেবা পাবেন। এছাড়াও সাধারণ জনগণ নামমাত্র ফি দিয়ে উন্নত চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সহযোগিতায় পরিচালনা করা হবে। জেলা প্রশাসন ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে যৌথ ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতকরণে জনবল পদায়ন করা হবে। এছাড়াও চট্টগ্রামের স্থানীয় স্পেশালাইজড চিকিৎসকসহ এনজিও এবং বিভিন্ন দাতব্য সংস্থায় কর্মরত অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের এ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা প্রদানে জড়িত করা হবে।
রেলওয়ে বক্ষব্যাধি হাসপাতালকে বিশেষায়িত হাসপাতালে রূপান্তরের উদ্যোগ
সরকারি কর্মচারীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও চিকিৎসাসেবা পাবেন