রেকর্ড স্কোর গড়েও অজিদের কাছে পরাস্ত ইংল্যান্ড

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »

রেকর্ড ৩৫১ রান করেও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে। গতকাল গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচে ২.৩ ওভার ও ৫ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের ডাকেট ও অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক জস ইংলিস সেঞ্চুরি হাঁকান। বিশাল রানের বিরুদ্ধে শুরুটা ভালো হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। ৫ম ওভারে ২৭ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে ছিল স্মিথরা। তৃতীয় উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে ওপেনার ম্যাথু শর্ট (৬৩) ও মারনুস ল্যাবুশেন (৪৭) দলীয় ইনিংসকে ১২২-এ পৌঁছে বিচ্ছিন্ন হন। এরপর অ্যালেক্স ক্যারি ও জস ইংলিসের দৃঢ়তায় অস্ট্রেলিয়া জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে। ২৮২ রানে গিয়ে ক্যারি (৬৯) ফিরে গেলে অভিজ্ঞ ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে জয়ের বন্দরে ভিড়তে সক্ষম হন জস ইংলিস। জস ইংলিস ১২০ ও ম্যাক্সওয়েল ৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন। ইংল্যান্ডের উড, জোফরা, কার্স, আদিল রশিদ ও লিভিংস্টন ১টি করে উইকেট নেন। এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩৫১ রানের রেকর্ডগড়া পুঁজি তুলেছে ইংল্যান্ড। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ড এটি, ভেঙেছে ২০০৪ সালে নিউজিল্যান্ডের করা ৩৪৭ রানের রেকর্ড। ইংলিশদের হয়ে ১৪৩ বলে ১৬৫ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেছেন বেন ডাকেট। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং শুরু করেন ইংলিশ ওপেনার ফিল সল্ট। তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি সল্টের ঝড়। ৬ বলে ১০ রান করে আউট হন সল্ট। ওপেনিং জুটি ভেঙেছে দলের ১৪ রানের মাথাতে। সল্টের বিদায়ের পর বেন ডাকেটের সাথে যোগ দেন জেমি স্মিথ। এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলে যাচ্ছিলেন ডাকেট। ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ে বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন দলের রান। স্মিথ বেশিক্ষণ টেকেননি। ১৩ বলে ১৫ রান করে বিদায় নেন তিনি। ডাকেট ছুটতে থাকেন। চারে নেমে ডাকেটের সাথে যোগ দিয়েছেন জো রুট। ছন্দে ছিলেন রুটও। সময়ের সাথে সাথে ক্রিজে জমে যান রুট। অন্যদিকে ডাকেট ছুঁয়ে ফেলেন ফিফটি। স্বভাবসুলভ আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে এগিয়েছেন ডাকেট। আরেক প্রান্তে রুটও ছিলেন বেশ সাবলীল। ডাকেট-রুটের কার্যকরী ব্যাটিংয়ে এগোতে থাকে ইংল্যান্ডের ইনিংস। ফিফটি হাঁকিয়েছেন রুট, বিদায় নিয়েছেন কিছুক্ষণ পরেই। তৃতীয় উইকেটে ১৫৮ রানের জুটি গড়েন রুট এবং ডাকেট। ৭৮ বলে ৬৮ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে বিদায় নেন রুট, দলের রান তখন ২০১। ডাকেট ছুটছিলেন। পাঁচে নেমে হ্যারি ব্রুক সুবিধা করতে পারেননি। ৬ বলে ৩ রান করে বিদায় নেন ব্রুক। ডাকেটের মারমুখি ব্যাটিংয়ে এগিয়েছে ইংল্যান্ডের ইনিংস। দারুণ কৌশলী এবং বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের খুব কাছে চলে যান ডাকেট। সেঞ্চুরিটা ছুঁয়ে ফেলতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি বেন ডাকেটকে। দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকান ডাকেট। সেঞ্চুরি পেরিয়ে ছুটে চলেছেন ডাকেট। অজি বোলারদের পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে রান তুলেছে ইংলিশ ওপেনার। কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছিল না ডাকেটকে। পরে দেড়শও পেরিয়েছেন ডাকেট। দলকে বড় পুঁজি এনে দিয়ে থেমেছেন ১৪৩ বলে ১৬৫ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে। দলের রান তখন ৩২২। ডাকেট ছাড়া বাকিদের মধ্যে ২১ বলে ২৩ রান করেন অধিনায়ক জস বাটলার। এছাড়া ১৭ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলেছেন লিয়াম লিভিংস্টোন। নির্ধারিত ৫০ ওভারের খেলা শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৫১ রানের পুঁজি দাঁড় করায় ইংল্যান্ড। ১০ বলে ২১ রান করে শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন জফরা আর্চার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে ৩৫১ রান দলীয় ইনিংসের হিসাবে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০০৪ সালে ৩৪৭ রান করা নিউজিল্যান্ডের দখলেই ছিল এই রেকর্ড। এছাড়া বেন ডাকেটের করা ১৬৫ রান টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড। এর আগে নিউজিল্যান্ডের নাথান অ্যাস্টলের করা ১৫১ বলে ১৪৫ রানের হার না মানা ইনিংস ছিল সর্বোচ্চ। সেই রেকর্ড ভেঙে এবার নতুন রেকর্ড গড়লেন ডাকেট।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩ উইকেট শিকার করেছেন বেন দারসুইস। ২টি করে উইকেট তুলেছেন অ্যাডাম জাম্পা এবং মারনাস লাবুশেন। ১ উইকেট নিয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
ক্যাপশন: সেঞ্চুরিয়ান ডকেট, তার অনবদ্য ইনিংস ও দলীয় রেকর্ড রান করেও পরাজয় এড়াতে পারেনি ইঙল্যান্ড