দেওয়ানহাট শেখ মুজিব রোড
নিজস্ব প্রতিবেদক »
লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ায় সংকুচিত হয়েছে শেখ মুজিব রোড। দেওয়ানহাট থেকে চৌমুহনী পর্যন্ত এলাকায় রাস্তা দখল করে ব্যবসা চলছে গাড়ি পার্টস ব্যবসায়ীদের। ফলে পূর্বের তুলনায় জনভোগান্তি বেড়ে তুঙ্গে উঠেছে। প্রশাসনের নিরব ভূমিকার কসরত দিচ্ছে চলাচলরত পথচারী ও এলাকাবাসী।
গতকাল বুধবার সারাদিন শেখ মুজিব রোডের দেওয়ানহাট মোড় থেকে আগ্রাবাদ মোড় পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, ঘড়িতে বিকেল ৫টা বেজে ১৩ মিনিট সারি সারি গাড়ি থেমে আছে সড়কে। নড়াচড়ার জায়গা নেই। এই দৃশ্য নতুন নয়। বরং এই সড়কে চলাচল করা পথচারী-যাত্রীরা যানজটের সাথে নিজেদের কর্মঘণ্টা ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। যানজটে আটকে থাকা গাড়ি থেকে বের হওয়া ইঞ্জিনের গরমে পরিবেশ আরো বেশি উষ্ণ হয়ে উঠেছে। আধঘণ্টা ধরে থেমে আছে ইপিজেডে কর্মরত পোশাক শ্রমিকদের বাসগুলো। তারমধ্যে সাধারণ যাত্রী পরিবহনের বাস, রাইডার, টেম্পু, অটোরিকশা, মোটরবাইক তো রয়েছেই। এই দুর্ভোগের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না বিদেশগামী যাত্রীরাও। নগর থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে যাতায়াতের জন্য পথ এটি।
এদিকে ফুটপাতে হাঁটতে গিয়ে দেখা যায়, এ সড়কের দুপাশে রয়েছে গাড়ির যন্ত্রাংশ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান। ফুটপাতের অনেকাংশ দখল করে রাখা হয়েছে এসকল প্রতিষ্ঠানের মালামাল। কিছু অংশ দখল করে রেখেছে ভ্রাম্যমাণ চা বিক্রেতা ও বিভিন্ন দৈনন্দিন সামগ্রীর ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা। সড়কের একাংশ দখল পার্কিং করে রাখা হয়েছে প্রাইভেট পরিবহন। এতে সারিবদ্ধভাবে গাড়ি দাঁড় করিয়ে চলছে মেরামতের কাজ। কোথাও দুই লেইন কোথাও তিন লেইন। সড়কে গাড়ি রেখে কাজ করার কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে তা দেখে ও যেন দেখছে না প্রতিষ্ঠানগুলো। আবার কিছু গাড়ি পার্কিং করা আছে কিন্তু এতে ড্রাইভার নেই। আশপাশের লোকজন জানালেন অফিসিয়াল গাড়ি তাই অফিসের নিচে সড়কেই রাখা হয়।
এই সড়কের মাজার গেইট এলাকায় শুরু হয়েছে লালখানবাজার টু এয়ারপোর্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ। যার ফলে রাস্তা আরো সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতেও থেমে নেই অবৈধ পার্কিং করে গাড়ি রেখে কাজ করার রাজকতা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দৈনিক এভাবেই চলছে এ সড়কের চলাচল ব্যবস্থা।
এলাকাবাসী বলছেন এ সড়কে বহু বছর আগে থেকে মোটরপার্টস ব্যবসায়ীদের রাজকতা চলছে। তাদের এমন বেপরোয়া গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে সাধারণ যাত্রী থেকে শুরু করে এলাকাবাসীও রয়েছে চরম ভোগান্তিতে। এ বিষয়ে প্রশাসনের সরব ভূমিকা কখনো দেখা যায়নি। পথচারীদের ভোগান্তির অন্তিম মিলে না এ সড়কে।
মোটরসপার্টস ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি মো. ফারুক সুপ্রভাতকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের মানবিক দিক বিবেচনা করে গত ৬ থেকে ৭ বছর আগে ক্রেতারা এক লাইনে গাড়ি রেখে যন্ত্রাংশ ক্রয়ের মৌখিক অনুমতি দিয়েছিলেন ডিসি ট্রাফিক। তবে রাস্তায় গাড়ি মেরামতের কাজ করাতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। রাস্তায় শুধু মেরামতের জন্য গাড়ি রাখা হয়না। বরঞ্চ অফিসিয়াল গাড়িগুলো রাখার কারণে ক্রেতাদের গাড়ি রাখতে বাঁধা সৃষ্টি হয়।’
তিনি একলাইনে গাড়ি রাখার দাবি করলে এ বিষয়ে লিখিত অনুমতির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এতে লিখিত কোন অনুমতি নেই। তবে ডিসি যে আসুক তার সাথে বৈঠকের মাধ্যমে এ বিষয়ে সমস্যা সমাধান করা হয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিসি (ট্রাফিক-পশ্চিম) তারেক আহমেদ সুপ্রভাতকে বলেন, ‘পার্কিং এর বিষয়ে ৫ থেকে ৬ বছর আগে কমিশনার স্যার একটি নির্দেশ দিয়েছিলেন। এক লাইনে গাড়ি রেখে যন্ত্রাংশ বিক্রয়ের অনুমতি ছিল। তবে এখানে মেরামত করার ব্যাপারে কোন নির্দেশনা ছিল না।’