নিজস্ব প্রতিনিধি, রামগড় »
দীর্ঘ অপেক্ষার পর বাংলাদেশের ১৫তম ও পার্বত্যাঞ্চলের প্রথম রামগড় স্থলবন্দর মৈত্রী সেতু-১ হয়ে যাত্রী পারাপার শুরু হতে যাচ্ছে।
গতকাল শনিবার সকালে ভারতের উত্তর-পূর্বে অরুণাচল প্রদেশের রাজধানী শহর ইটানগর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার সাবরুমে স্থলবন্দরটির আইসিপি বা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টের উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এদিকে রামগড়-সাব্রুম ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট উদ্বোধন উপলক্ষে ত্রিপুরার সাবরুম ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট ভবনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা, রাজ্যের মন্ত্রী সভার সদস্য সুশান্ত চৌধুরী, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী সান্ত¡না চাকমা ও ভারতের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আদিত্য মিশ্রসহ রাজ্যের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেয়া বক্তব্যে ভারতের স্থলবন্দর কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান আদিত্য মিশ্র বলেন, মৈত্রী সেতু দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলো এবং উত্তরপূর্ব ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ও যোগাযোগের নতুন পথের সূচনা করবে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেতু হয়ে উঠবে। কার্গো ও ট্রান্সশিপমেন্ট ছাড়াও সাবরুম আইসিপি দুই দেশের যাত্রীদের চলাচলের সুবিধা করবে। এই সেতু সম্পূর্ণ চালু হলে ভারত ও বাংলাদেশের বাণিজ্যিক অবস্থা এবং উভয় দেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের পক্ষে বিশেষভাবে সহায়ক হয়ে উঠবে।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ১১২ কিলোমিটার দূরত্বের এই স্থলবন্দর ব্যবহার করে মাত্র ৩ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ট্রান্সশিপমেন্টের পণ্য যেতে পারবে ভারতে। দেশটির সেভেন সিস্টার্স খ্যাত উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যসহ মেঘালয়, আসাম, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড এবং অরুণাচলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে এই বন্দর দিয়েই। একই সঙ্গে রামগড় স্থলবন্দর ব্যবহার করে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে পণ্য পরিবহন করতে পারবেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। বাড়বে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। বিকশিত হবে পাহাড়ের অর্থনীতি। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করে এ স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়ার কাজ চলবে। স্থলবন্দর চালুর লক্ষে রামগড়ে মহামুনি এলাকায় ৪১২ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৪ দশমিক ৮০ মিটার প্রস্থের বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ নামে একটি সেতু নির্মাণ করেছে ভারত।
রামগড় স্থলবন্দর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ন সচিব) সরওয়ার আলম বলেন, ভারতের সাবরুম আইসিপি সেন্টার উদ্বোধন হয়েছে। ফলে পূর্ব সিন্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসেই যাত্রী পারাপার শুরু হবে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের দিক থেকে যাত্রী পারাপারে আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। ভারত যখনই বলবে তখন থেকে যাত্রীরা ভিসা নেওয়া সাপেক্ষে যাতায়াত করবেন।