সুপ্রভাত ডেস্ক »
রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিগত প্রতিযোগিতার কারণে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে সম্মাননা জানাতে ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে নওফেল বলেন, চট্টগ্রামে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের সামনে নিয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের চেষ্টা করে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে ব্যক্তিগত প্রতিযোগিতা কখনো এত বেশী হয়ে যায় যার কারণে উন্নয়নও বাধাগ্রস্থ হয়। সেগুলো নিরসনে সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে প্রতিবছর জলাবদ্ধতা হচ্ছে। কাজ যেভাবে এগোবার কথা ঠিক সেভাবে এগুচ্ছে না। অনেক সমস্যা আছে সেগুলো নিরসনের চেষ্টা চলছে। কিন্তু একসাথে সমন্বয় করে কাজ করতে না পারলে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে না।
এসময় প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে নওফেল বলেন, এক দিনের নির্বাচন বা গণতন্ত্রের মাধ্যমে পৃথিবীর কোন দেশেই সামষ্টিক গোষ্ঠীর উন্নয়ন নিশ্চিত হয়নি। উন্নয়ন তখনই হয় যখন প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, জনসেবা নিশ্চিত করতে পারে এবং জবাবদিহিতা সঠিকভাবে হয়। এই জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কাজটিই সাংবাদিকরা এগিয়ে নিচ্ছে।
দেশে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ভুঁইফোড় সংবাদ মাধ্যম বাড়ছে জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিক সমাজের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সরকারকে চিন্তা করতে হবে। অনিয়ন্ত্রিত ও অনিবন্ধিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেজ খুলে সাংবাদিক পরিচয় দেবার যে প্রবণতা দেখা দিয়েছে সেখানে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা প্রতিবেশী দেশগুলোর তূলনায়ও অর্থনৈতিকভাবে অনেক পিছিয়ে। এর কারণ দেশের গণমাধ্যম পুরোপুরি বিজ্ঞাপন নির্ভর। অথচ, প্রতিবেশী দেশেও ইলেকট্রিনক মিডিয়াগুলো সাবস্ক্রিপশন ফি আদায় করে এর একটি অংশ সাংবাদিকদের দিতে পারছে।
নওফেল বলেন, দেশে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরাই সাংবাদিকতার নীতি নৈতিকতা, গতি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে যা দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু পাশ্ববর্তী দেশেও ৪৯ শতাংশের বেশী মালিকানা উদ্যোক্তাদের দেয়া হয় না। কঠোর নীতিমালা না থাকলে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা পেশাকে বিত্তশালীদের নিকট আবদ্ধ হয়ে যাবে।
সিইউজে সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সিইউজের সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, সিইউজের সিনিয়র সহ-সভাপতি রতন কান্তি দেবাশীষ, সহ-সভাপতি অনিন্দ্য টিটো প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।