সুপ্রভাত ডেস্ক »
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় আজ শনিবার রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। গায়ক থেকে রাজনীতিবিদে রূপান্তরিত বাবুল এই ঘোষণা দিয়েছেন তাঁর ফেসবুকের পাতায়। দীর্ঘ একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, রাজনীতি ছাড়ছেন, দল ছাড়ছেন এবং সাংসদ পদও ত্যাগ করছেন।
২০১৪ সালে যখন বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে বিজেপি কেন্দ্রে সরকার গঠন করে, সেই থেকে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি হিসেবে বাবুল সুপ্রিয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। পূর্ণমন্ত্রী না হলেও যথেষ্ট দায়িত্বপূর্ণ পদে তিনি ছিলেন। কিন্তু অতি সম্প্রতি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে পর পর দুটো ধাক্কা লেগেছে। প্রথমত, বিগত পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়া, দ্বিতীয়ত, অতি সম্প্রতি মন্ত্রীসভা থেকে বাদ পড়া। এই মন্ত্রীত্ব যাওয়াটা তিনি যে মেনে নিতে পারেননি, সেই ক্ষোভ তিনি চেপে না রেখে বারেবারেই প্রকাশ করেছেন।
আজকের দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট তিনি শুরু করেছেন নাটকীয় ভাবে— চললাম, আলবিদা.. তারপর অনেক কথাই তিনি লিখেছেন, যাতে বোঝা যাচ্ছে তাঁর মন ভেঙে গিয়েছে নানা কারণে। মন্ত্রীত্ব থেকে বাদ পড়া তো বটেই, তা ছাড়াও দলের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল একটা বড় কারণ। বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। নাম না করে সে কথাও লিখেছেন তিনি। তবে, সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও দলে তিনি যোগদান করছেন না। সমাজ সেবা করবেন, আর যেমন আগে গান গাইতেন, তাই গাইবেন। বাবুল সুপ্রিয় বলেছেন, আমি বরাবর একদলে বিশ্বাস করি। চিরকাল যেমন আমি মোহনবাগান দলের একনিষ্ঠ সমর্থক, তেমন মনেপ্রাণে আমি বিজেপি। রাজনীতি করব না ঠিক করেছি, তাই কোনও রাজনৈতিক দলে যাচ্ছি না।
অনিশ্চয়তাকে ভয় না পেয়ে নিজে যখন যা মনে করেছি, মন প্রাণ দিয়ে করেছি। একসময় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে মুম্বাইতে চলে গিয়েছিলাম। আজও রাজনীতি ছেড়ে আমার নিজের জগতে ফিরে যাচ্ছি।
বিজেপি দলের পক্ষ থেকে কেউ এখনও এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির মুখপাত্র মন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় ওই ফেসবুক পোস্টেই মন্তব্য করতে গিয়ে তাঁকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ করেছেন। বলেছেন, একটু সময় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় সব ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে।
ফেসবুকের পোস্টে সবশেষে বাবুল সুপ্রিয় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের একটি জনপ্রিয় গানের লিংক ইউটিউব থেকে তুলে দিয়েছেন— একমুঠো রজনীগন্ধা হাতে নিয়ে বললাম, চললাম..
সূত্র : ভিওএ