ফজলে এলাহী, রাঙামাটি »
রাঙামাটিতে টানা বর্ষণে জেলার বিভিন্ন স্থানে ২০টি স্থানে ছোটোবড় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে এখনো কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
বৃহস্পতিবার সকালে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের ঘাগড়ার কলাবাগানসহ বেশ কিছু এলাকায় পাহাড়ধসে প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। পরবর্তীতে সড়ক বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সড়ক থেকে মাটি সরিয়ে যান চলাচল সচল করে।
তবে মহালছড়ি এলাকায় সড়কের পানি থাকায় বন্ধ রয়েছে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি আন্তঃজেলা যান চলাচল।
পাহাড়ধসের ঝুঁকি এড়াতে জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে শহরের শিমুলতলী, রূপনগর সহ বেশ কিছু এলাকায় মাইকিং করে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে অনুরোধ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।
জেলার কাউখালী উপজেলার ইছামতি খাল ও কাউখালী খালে পানি বেড়ে ডুবে গেছে আশ্রয়ন প্রকল্পের ২০টি ঘর।
অন্যদিকে রাঙামাটির বাঘাইছড়ির বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। আগেরদিনের তুলনায় নতুন করে আরও কয়েকটি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
শহরের রূপনগর এলাকার বাসিন্দা কুলসুমা আক্তার বলেন, আমার আপাতত কোন সমস্যা নাই। তবুও যদি বৃষ্টি বেশি হয় তাহলে রাতে আশ্রয় কেন্দ্রে যাবো। আমাদের আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে বলেছে। কিন্তু সেখানে থাকা খাওয়ার পরিবেশ ভালো না। তাই যেতে ইচ্ছে করেনা।
শিমুলতলী এলাকার বাসিন্দা আকলিমা বেগম জানান, বাড়ির কিছু অংশ বৃষ্টির পানিতে ভেঙ্গে গেছে। আশ্রয় কেন্দ্রে গেলে ঘরে মুরগি, ছাগল আছে এগুলো ফেলে কিভাবে যাবো। আবার ঘরে রেখে গেলে চুরি হয়ে যায়। এসব নিয়ে দোটানায় আছি।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার বলেন, উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি ঘটেছে। উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত ৫৫ টি আশ্রয় কেন্দ্রে খোলা হয়েছে, সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১ হাজার ৬৫৫ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে রান্না করা খাবার দেয়া হচ্ছে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, জেলায় ছোট-বড় কয়েকটি পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটলেও কোথাও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। রাঙামাটি সদরে পাহাড়ধসে ঝুঁকিতে আছে ১৩৬৬ মানুষ। প্রাণহানি এড়াতে জেলায় ৭৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রাণহানি রোধে ঝুঁকি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে আনতে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে।