শফিউল আলম, রাউজান »
চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার ডাবুয়া খালের দুপাড়ে ফসলি জমিতে বেগুন চাষাবাদ করেন এলাকার কৃষকরা। ডাবুয়া খালের দুপাড়ে উৎপাদিত বেগুনের কদর বেশি। ডাবুয়ার বেগুন শুটকি দিয়ে রান্না করলে তার স্বাদ আলাদা। ডাবুয়ার বেগুনের চাহিদা বেশি হওয়ায় অন্য এলাকার উৎপাদিত বেগুনের চেয়ে ডাবুয়ার বেগুনের দাম বেশি।
পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী এলাকা থেকে প্রবাহিত ডাবুয়া খাল। ডাবুয়া খালটি রাউজানের হলদিয়া ইউনিয়নের বৃকবানুপুর, বৃন্দাবনপুর, জানিপাথর, উত্তর আইলী খীল, ডাবুয়া ইউনিয়নের পুর্ব ডাবুয়া, কেউকদাইর, রোয়াইঙ্গা বিল, রামনাথ পাড়া, চিকদাইর ইউনিয়নের পাঠান পাড়া, সন্দ্বীপ পাড়া, চিকদাইর, রাউজান পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের বাচামিয়ার দোকান, সন্দ্বীপ পাড়া, ক্ষেত্রপাল, জানালী হাট, সুলতানপুর কাজী পাড়া, পশ্চিম সুলতানপুর,বিনাজুরী ইউনিয়নের ইদিলপুর, হয়ে সোনাইর মুখ খালের সাথে সংযুক্ত হয়েছে । ডাবুয়া খালের দুপাড়ের জমিতে শুস্ক মৌসুমে কৃষকরা বেগুন চাষাবাদ করেন। বেগুন ছাড়াও অন্যান্য সবজিরও চাষাবাদ করা হয়। সর্তা, ডাবুয়া, কাঁশখালী ও হালদা নদীর চরে শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলনের আশাবাদী কৃষকরা। বিশেষ করে এই উপজেলার ডাবুয়া-সর্তা খালের চরে উৎপাদিত বেগুনের চাহিদা রয়েছে চট্টগ্রাম জুড়ে। পাহাড়ি অঞ্চল বড়মাছড়ি থেকে সৃষ্টি সর্তা খালের পানি দিয়ে হলদিয়া হচ্ছার ঘাট, খিরাম, সর্তারকুল, ডাবুয়া, চিকদাইর, নোয়াজিশপুর ও গহিরা ইউনিয়ের শত শত কৃষক মৌসুমি শীতকালীন সবজি চাষাবাদ করেন। ডাবুয়া খালের পানি দিয়ে হলদিয়া বৃন্দাবন, বৃক্ষভানপুর, জানিপাথর, আইলখীল, ডাবুয়া রোহিঙ্গার বিল, চিকদাইর এলাকায় সবজির চাষাবাদ করেন কৃষকরা। এই দুই খালের পানি ব্যবহারের উৎপাদিত সবজিগুলো খুব সুস্বাদু। রাউজানের সবজিভাণ্ডারখ্যাত আরেক এলাকার নাম কাজী পাড়া ও শরীফ পাড়া কাঁশখালী কুল। এই দুই এলাকায় কাঁশখালী খালের পানি দিয়ে সবজির চাষকরেন শতাধিক কৃষক। এখানে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মরিচ, শিম, আলু, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, মুলা, বরবটিসহ ইত্যাদি সবজি বেশি হয়। আর সর্তা-ডাবুয়া খালের চরে বেশি বেগুন, মরিচ, মুলা, আলু, ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ হয়। এলাকার লোকজন বলেছেন, শীতকালীন সবজির মধ্যে খ্যাতি আছে এ দুই স্থানের বেগুন।
সর্তা-ডাবুয়া এলাকা পরিদর্শন করে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। সর্তা ও ডাবুয়া খাল তাদের জীবন জীবিকার উৎস। এখানে উৎপাদিত বেগুনের কদর রয়েছে সমগ্র চট্টগ্রামে। বিশেষ করে ডাবুয়া, সর্তাপাড়ে উৎপাদিত বেগুনের চাষ। সর্তা খাল দিয়ে বেগুনের ভার কাঁধে নিয়ে আসা কৃষক নুরুল আলমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হলদিয়া হচ্ছার ঘাট, খিরাম এলাকায় শতাধিক হাজার হাজার হেক্টর জমিতে সর্তা খালের পানি দিয়ে শীতকালীন সবজি চাষাবাদ করেছে। তিনি বলেন, আমাদের উৎপাদিত সবজি ব্যবসায়ীরা এখান থেকে কিনে নিয়ে রাউজান-ফটিকছড়িসহ চট্টগ্রামের অঞ্চলের হাট-বাজারে বিক্রি করেন। আমি ৩০ শতক জমিতে বেগুন চাষ করেছি। ক্ষেত এখন ভরে উঠেছে বেগুনে। ক্ষেত থেকে ৪৫-৬০ পাইকারি দরে কিনে নিয়ে বাজারে বিক্রি করে কেজিতে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুম কবির জানান, রাউজানে এবার বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষাবাদ হয়েছে ১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে। ফলন উৎপাদন হবে ২৮ হাজার ৫৮৫ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বেগুন হয়েছে ১২০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হবে ৩ হাজার মেট্রিক টন। ক্ষেতের পরিচর্যার জন্য কৃষকদের সার্বক্ষণিকভাবে মাঠে থাকা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সবধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছেন।


















































