থানায় জিডি
নিজস্ব প্রতিনিধি, রাউজান <
রাউজানে রহস্যজনকভাবে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে বনবিভাগের ৪৫ হেক্টর বাগানের মধ্যে ২০ হেক্টর জায়গায় বনায়নের ১৭ হাজার গাছের চারা পুড়ে নষ্ট হয়েছে।
এই বিভাগের ৪৫ হেক্টর জায়গার মধ্যে প্রতি হেক্টরে আড়াই হাজার গাছের চারা রোপণ করা হয়েছিল। সে হিসেবে ২০ হেক্টর জমিতে ৫০ হাজার গাছের চারা আগুনে পুড়ে নষ্ট হওয়ার কথা। কিন্তু রাউজান থানায় করা সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়েছে ২০ হেক্টর জমিতে গামারী, চিকরাশি, শীল কড়ই, আকশমনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা পুড়েছে মাত্র ১৭ হাজার। ক্ষতি দেখানো হয়েছে ৯ লাখ টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের আওতাধীন রাউজান ঢালা বিট কাম চেক স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা এসএম আবদুর রশিদ।
রাউজান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় বন বিভাগের ৯ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।’
স্থানীয়রা জানান, সোমবার সারারাত পাহাড়টিলায় আগুন জ্বলেছে। মঙ্গলবার দিনের বেলায়ও বিভিন্নস্থানে অগ্নিশিখা দেখে গেছে। বনবিভাগের বাগান পুড়ে আগুন ছড়িয়ে পুড়েছে রাউজান রাবার বাগানের পরিত্যক্ত জায়গার বন-জঙ্গল। যদিওবা রাবার বাগানের জায়গায় বনায়ন হয়নি। আগামী বছর বনায়নের পরিকল্পনা ছিল রাবার বাগান কর্তৃপক্ষের।
রাউজান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের লিডার মো. কাউসার আহমেদ বলেন, সোমবার দুপুর দেড়টায় ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সম্পূর্ণ আগুন নিয়ন্ত্রণের পর পৌনে ৭টায় স্টেশনে আসি।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, আগুন সরারাত ছিল, দিনের বেলায় বিভিন্নস্থানে অগ্নিশিখা দেখা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আসার পর হয়তো আবার আগুন ধরেছে। পরবর্তীতে আর খবর পাইনি। দুপুর ২টা থেকে টানা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত দমকলবাহিনীর ৮ সদস্য আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পানি না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লেগেছে বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ইছামতি রেঞ্জের কর্মকর্তা খসরু আমীন বলেন, বাগানে আগুন লাগার ঘটনায় ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ের পর থানায় জিডি করা হয়েছে। এটি একটি দুর্ঘটনা, তাই কাউকে দোষারোপ করতে পারিনা। আশপাশে স্বল্প সংখ্যক বাড়িঘর ছিল, সেসব বসতঘরের ক্ষতি হওয়ার আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।
তিনি আরও বলেন, ৪৫ হেক্টর টিলাভূমির মধ্যে প্রতি হেক্টরে আড়াই হাজার করে ১ লাখ ১২ হাজার ৫০০টি গাছের চারা রোপণ করা হয়েছিল। এরমধ্যে ১৭টি পুড়ে গেছে। ২০ হেক্টর বাগান পুড়ে যাওয়ার কথা জিডিতে উল্লেখ থাকলেও আগুনে নষ্ট গাছের সংখ্যা ৫০ হাজারের স্থলে ১৭ হাজার কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ২০ হেক্টর উল্লেখ করেছি, কিন্তু পুড়ে যাওয়া গাছগুলোর প্রকৃত সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, বন বিভাগের রাউজান ঢালা বিট কাম চেক স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা এসএম আবদুর রশিদ বাদি হয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।