রমজান মাসে জনভোগান্তি হ্রাসে যানজটমুক্ত সড়ক চান সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। গতকাল বুধবার চসিকের নির্বাচিত ৬ষ্ঠ পরিষদের ২৬তম সাধারণ সভায় মেয়র বিভিন্ন সেবা সংস্থার সাথে এ বিষয়ে সমন্বয়ের জন্য দিকনির্দেশনা দেন।
সভাপতির বক্তব্যে মেয়র বলেন, পবিত্র রমজান মাসে মানুষ পরিবারের সাথে ইফতার করতে চায় আর ঈদের পোশাক স্বচ্ছন্দে কেনাকাটা করতে চায়। এজন্য রোজার মাস ও ঈদের সময় সড়কে যাতে যানজট না হয় সে বিষয়ে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনসহ অন্যান্য সেবা সংস্থার একযোগে কাজ করা প্রয়োজন। কাউন্সিলরবৃন্দ এবং প্রকৌশলীরা ওয়ার্ডের সড়কগুলোতে আলোকায়ন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন। আর হকারদের অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। রোজায় বাজারগুলোর রাস্তা যাতে ব্যবহারযোগ্য থাকে এবং নালাগুলো যাতে পরিষ্কার থাকে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ব্যাটারিরিকশা জনভোগান্তির কারণ হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে এ রিকশাগুলো বিপুল বিদ্যুৎ ব্যয় করছে। এ ব্যাটারিরিকশা কেবল বন্ধ করলে হবে না, এর বিকল্পও চিন্তা করতে হবে। ইতোমধ্যে আমরা সৌরবিদ্যুৎচালিত রিকশা চালুর বিষয়ে অনেকটা এগিয়েছি। সৌরচালিত রিকশাগুলো বর্ষাকালে কিছুটা ধীরগতির হয়ে গেলেও সারা বছর বেশ ভালো সেবা দেবে। এ ধরনের বিকল্প ব্যবস্থা না করলে ব্যাটারিরিকশা বন্ধ করা কঠিন হয়ে যাবে।
মেয়র নগরীর নিউমার্কেট, রেয়াজউদ্দিন বাজারসহ গুরুতপূর্ণ স্থানসমূহে হকারদের মাধ্যমে অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠা দোকান উচ্ছেদ, বহদ্দারহাট থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত রিকশা চলাচল বন্ধ, নগরীর ফøাইওভারের নিচে এবং অন্যান্য উপযুক্ত স্থানে সড়কসমূহে পে পার্কিং চালুকরণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেন।
সভায় প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলরবৃন্দ এবং চসিকের কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
এ সময় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) উদ্দেশে মেয়র বলেন, সিডিএর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুরাদপুর রোড ও মূল সড়কের সংযোগ স্থলে রাস্তা কর্তনের ফলে সৃষ্ট জনদুর্ভোগ লাঘব করতে হবে। মহেশ খালের মুখে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ী স্লুইচ গেইট নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়ায় জোয়ারের পানি আপাতত অস্থায়ী স্লুইচ গেট দিয়ে বের করার এবং উক্ত খালের উপর নির্মিত সেতুতে নিরাপত্তার স্বার্থে রেলিং স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পূর্বে খালের ভিতর দিয়ে পানি চলাচলের সুবিধার্থে খালের ভিতরে স্তূপকৃত মাটিগুলো দ্রুত অপসারণ করতে হবে।
সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে কার্যক্রমের সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, চলমান প্রকল্পগুলো শেষ হলে চট্টগ্রামের বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। তবে সেবা সংস্থাগুলো চসিকের সাথে সমন্বয় না করলে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমের সুফল হুমকির মুখে পড়বে।
সভায় বিগত সাধারণ সভার কার্যবিবরণী, দরপত্র কমিটির কার্যবিবরণী এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যবিবরণী অনুমোদিত হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতিগণ তাদের নিজ নিজ কমিটির কার্যবিবরণী পেশ করেন।
সভায় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলরবৃন্দ, সচিব খালেদ মাহমুদসহ চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ এবং নগরীর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি