ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক জানিয়েছেন, আসন্ন রমজানে ডিবি পুলিশ বিশেষ অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন এলাকার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ‘অলআউট অ্যাকশন’ চালানো হবে। আমরা যেমন সাধারণ মানুষের আস্থা হতে চাই, তেমন অপরাধীদের জন্য হতে চাই আতঙ্ক। এই মূলনীতি নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
এসময় তিনি আরও বলেন, পবিত্র রমজান মাসে নগরবাসী যাতে নিরাপদে ইবাদত করতে পারেন সেজন্য ডিবির কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি করা হবে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, যেকোন প্রয়োজনে ডিবি আপনাদের পাশে থাকবে।
শনিবার (১ মার্চ) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ‘পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার উদ্দেশে ডিবি কর্তৃক পরিকল্পিত কার্যক্রম’ সংক্রান্ত এক সংবাদ সন্মেলনে এসব বলেন তিনি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিরলস ভূমিকা পালন করছে বলে উল্লেখ করে রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে ডিবি নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি বিশেষ অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে। এটি হবে বিশেষ গোয়েন্দা অভিযান। অভিযানে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যে থেকে অপরাধীদের আটক করবে। রমজানে মানুষের কর্মযজ্ঞ বাড়ে। বিশেষ করে টাকার লেনদেন বেশি হয়। ব্যাংক ও বিমাসহ সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকের ভিড় বাড়ে। রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল ও লঞ্চ টার্মিনালে মানুষের ভিড় বাড়ে। এসব স্থানে কেউ যেন নাশকতা ঘটাতে না পারে সেজন্য আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া দূরের যাত্রা পথে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটানো হয় সেজন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
গোয়েন্দা তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, যারা চুরি ডাকাতি ও ছিনতাই করছে, তাদের বেশিরভাগেরই বয়স ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। তারা অনেকেই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। এ অপরাধীদের ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দল তাদের ইন্ধন দিয়ে অপরাধে জড়াতে সহযোগিতা করছে। বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনীর কথা আমরা শুনতে পাচ্ছি। তাদের বিরুদ্ধে আমরা অলআউট অ্যাকশনে যাচ্ছি।
যৌথ বাহিনীর তৎপরতা তুলে ধরে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যৌথ বাহিনী তৎপরতা বাড়িয়েছে। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে সেনাবাহিনী। আমরা বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে তাদের সহযোগিতা করছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। আমরা আশা করছি আরও ভালো অবস্থা দেখতে পাবেন। ডিএমপিতে সাদা পোশাকে ডিবি পরিচয়ে কাউকে তুলে নেওয়া বা আটক করলে আমাদের জানাবেন। পাশাপাশি নাশকতার কোনো তথ্য থাকলে ডিবিকে সহযোগিতা করবেন। তথ্য দাতার পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রাখা হবে।
ডিবিপ্রধান বলেন, আমরা যেমন সাধারণ মানুষের আস্থার স্থল হতে চাই। তেমন অপরাধীদের জন্য হতে চাই আতঙ্ক। এই মূলনীতি নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ছোট অপরাধ বড় অপরাধের জন্ম দেয়। তাই যেকোন অপরাধ এবং অপরাধীর ক্ষেত্রে আমরা নিয়েছি জিরো টলারেন্স নীতি।
চুরি ছিনতাই ডাকাতি রোধে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সমাজকে মাদকের থাবা থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতিনিয়ত পরিচালনা করা হচ্ছে মাদকবিরোধী অভিযান। চিহ্নিত সন্ত্রাসী হোক বা যেকোনো অপরাধীই হোক ডিবির জালে তাদের ধরা পড়তেই হবে। সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী বা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে। এদের আমরা বিন্দুমাত্র ছাড় দেবো না।