বিভাগীয় অ্যাডভোকেসি কর্মশালায় চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বক্তারা
জনস্বাস্থ্য সুবিধায় জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতায় (জিবিভি) স্বাস্থ্যখাতের প্রতিক্রিয়া জোরদার করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় অ্যাডভোকেসি কর্মশালা গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর সিনেমা প্যালেস সংলগ্ন লয়েল রোডস্থ বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয়।
ইউএনএফপিএ’র সহযোগিতায় জেন্ডার, এনজিও, স্টেকহোল্ডার ইউনিট, এইচইডব্লিউ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্মশালার আয়োজন করে। বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীরের সভাপতিত্বে ও জিএনএসপিইউ’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজমা সিদ্দিকী বেগমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহাদৎ হোসেন (অতিরিক্ত সচিব)। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, সাভারের বিপিএটিসি’র এমডিএস আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর (ডা.) শাহানা আক্তার ও কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জিএনএসপি ইউনিটের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. সাইদুর রহমান খান। জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসত বিষয়ে আলোকপাত করেন ইউএনএফপিএ’র টেকনিক্যাল অফিসার ডা. রাহাত আরা নুর। কর্মশালায় চট্টগ্রাম বিভাগের ৬ জেলার তত্ত্বাবধায়ক, ১১ জেলার সিভিল সার্জন, ১১ জেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক, ১১ জেলা সদর হাসপাতালের আরএমও, ৪ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত আরএস (গাইনি অ্যান্ড অবস), আরএস (পেডিয়াট্রিক সার্জারি) ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ কর্মশালায় অংশ নেন।
অ্যাডভোকেসি কর্মশালায় বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্যখাতে জেন্ডার জনিত সহিংসতায় সেবা প্রদানে চিকিৎসকদের আরো বেশি আন্তরিক হতে হবে। নারী-শিশু নির্যাতন প্রতিকার ও প্রতিরোধে স্বাস্থ্যখাতের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা জনগণের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া একজন চিকিৎসকের দায়িত্ব। সকলের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারলে সরকার কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে। নারী-শিশু নির্যাতনের প্রতিকার ও প্রতিরোধে সরকার সংকল্পবদ্ধ। এ লক্ষ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নির্যানের শিকার ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও মেডিক্যাল পরীক্ষা সংক্রান্ত বিধান রয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, পুলিশ রেফারেন্স ছাড়াও ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার কোন নারী বা শিশু যে কোন সরকারি অথবা সরকার কর্তৃক স্বীকৃত বেসরকারি হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে যথানিয়মে পরীক্ষাসহ তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা দিতে হবে। একইসাথে অপরাধ সংঘটনের বিষয়টি নিকটস্থ থানাকে অবহিত করতে হবে। পরবর্তীতে মেডিক্যাল সার্টিফিকেটের এক কপি নির্যাতিতাকে, এক কপি আইনি প্রয়োজনে কোর্ট/পুলিশকে প্রদান ও এক কপি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সংরক্ষণ করতে হবে। ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে অপরাধ সংঘটনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাসায়নিক/ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার প্রয়োজনে পুলিশের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। সকল ক্ষেত্রে নির্যাতিতাদের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। মেডিক্যাল সার্টিফিকেটে অবমাননাকর ‘যৌন কাজে অভ্যস্ত’ শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। সকল ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাইডলাইন অনুসরণ করতে হবে। বিজ্ঞপ্তি