সুপ্রভাত ডেস্ক :
ঢাকাই সিনেমার শক্তিমান এক নাম ওয়াসিম। ’৭০ ও ’৮০ দশকের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। নায়ক হিসেবে তার ছিল দুর্দান্ত সাফল্য। সেই সোনালী যাত্রার সমাপ্তি হলো ১৭ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টা ৩০ মিনিটে। রাজধানীর শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তার মৃত্যুর খবরে শোক নেমেছে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে।
বিখ্যাত এই অভিনেতা জীবনের শুরুতে সিনেমায় নাম লেখানোর কথা কখনো ভাবেননি। বরং একজন বডিবিল্ডার হিসেবে নিজেকে তৈরি করেছিলেন তিনি। সুদর্শন এই মানুষটি একসময় সিনেমায় এলেন। হয়ে উঠলেন কোটি নারীর স্বপ্নের পুরুষ। ওয়াসিমের পারিবারিক নাম মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। স্কুলজীবন থেকেই শরীর চর্চায় মনোযোগী ছিলেন। পাকিস্তান আমলে ‘মিস্টার ইস্ট পাকিস্তান’ নির্বাচিত হয়েছিলেন।
১৯৭২ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক এস এম শফীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। শফী এই সুদর্শন মানুষটিকে দেখে অভিনয়ে আনতে চাইলেও ওয়াসিমের তেমন ইচ্ছে ছিল না। কিন্ত শফীর আগ্রহেই ১৯৭২ সালে তার পরিচালিত ‘ছন্দ হারিয়ে গেল’ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হন তিনি। এতে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেন।
১৯৭৪ সালে আরেক প্রখ্যাত চিত্রনির্মাতা মোহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ চলচ্চিত্রে প্রথম নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ তার। চলচ্চিত্রটির অসামান্য সাফল্যে রাতারাতি সুপারস্টার বনে যান তিনি।
১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া ওয়াসিম অভিনীত ও এস এম শফী পরিচালিত ‘দি রেইন’ তাকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়। পৃথিবীর ৪৬টি দেশে ‘দি রেইন’ মুক্তি পেয়েছিল। ছবিটি বাম্পার হিট হয় আর ওয়াসিমকে অভিনেতা হিসেবে পৌঁছে যান অনন্য উচ্চতায়।
১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ঢাকার চলচ্চিত্রে ওয়াসিম ছিলেন শীর্ষ নায়কদের একজন। সাহসী নায়ক বলা হতো তাকে। টানা ৬০টিরও বেশি সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। যা বাংলাদেশ তো বটেও, সারাবিশ্বেই এক বিরল ঘটনা বলে দাবি করেন চলচ্চিত্রের মানুষেরা।
ওয়াসিম ফোক ফ্যান্টাসি আর অ্যাকশন ধারার ছবির অপ্রতিদ্বন্দ্বী ড্যাশিং হিরো। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ওয়াসিমের তখন একচেটিয়া রাজত্ব। পোশাকি, সামাজিক, গ্রামীণ, লাভস্টোরি, মারদাঙ্গা সব ধরনের ছবিতেই তার নাম। ওয়াসিম ১৫০-এর মতো ছবিতে নায়ক ছিলেন। হাতেগোনা অল্প কিছু ছবি ছাড়া প্রতিটি ছবিই সুপারহিট হয়েছিল। খবর : ডেইলিবাংলাদেশ’র।
বিনোদন