নিজস্ব প্রতিবেদক :
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও যানজট নিরসনে চট্টগ্রাম সিটি করপো রেশনের প্রশাসককে ২৪ প্রস্তাবনা দিল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি এসব প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করা, বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল ব্যবহার উপযোগী করা, বাস/ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ, ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, সিগন্যাল বাতি আধুনিকায়ন ও অটোমেশন সিস্টেম, সড়কে জেব্রা ক্রসিং ও রোড মার্কিং করা, শাহ আমানত মার্কেট ও জিইসি মোড় এলাকায় সিটি করপোরেশনের জায়গায় গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা করা, লাইসেন্সবিহীন রিকশা নিয়ন্ত্রণ বা উচ্ছেদ করা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সময়সীমা নির্ধারিত রাখা, যাত্রী ছাউনিতে দোকান নির্মাণ না করা, ডাম্পিং এর জন্য জায়গা বরাদ্দ করা, যানবাহন পার্কিংয়ের জায়গায় মার্কিং করা, মাঝিরঘাট ও বাংলাবাজার এলাকায় গাড়ি পার্কিং এর জায়গা স্থাপন করা, ওয়েট স্কেল অপসারণ, ফুটপাতে ফেন্সিংয়ের ব্যবস্থা করা, বহদ্দারহাট কাঁচা বাজারের মুখ পরিবর্তন করা, বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের নিচে মসজিদের পাশের বাগান অপসারণ করা, কদমতলী ফ্লাইওভারের নিচের জায়গায় শুধু ডিভাইডার দেয়া, মেরিন ড্রাইভ সড়কটি সদরঘাট হয়ে মাঝিরঘাট রাস্তার সাথে সংযুক্ত করা, ওয়াসার পানির পাইপ বসানোর ক্ষেত্রে সমন্বয় করা, সিটি করপোরেশন ও জাইকা কর্তৃক রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণে রাস্তার উপর উপকরণ সামগ্রী না রাখা, রাস্তার উপর রাখা বৈদ্যুতিক পিলার অপসারণ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা এবং নগরীর সড়কে সৃষ্ট খানাখন্দ দ্রুত মেরামত করা।
এসব প্রস্তাবনার বিষয়ে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, এ শহরের যানজট নিরসন ও ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতে অবশ্যই ফুটপাতের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে হবে। একইসাথে এখনই কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা যায়। যেমন- আউটার রিং রোড পুরোদমে চালু করে দেয়া গেলে বন্দরকেন্দ্রীক যানবাহনগুলো ওদিক দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে। একইসাথে ডিটি-বায়েজিদ সংযোগ সড়কটি দ্রুত চালু করা গেলেও শহরের ভেতরে যানবাহনের চাপ কমবে। এ দুটি রোড চালু হলে অনেক যানবাহন আর শহরের ভেতরে প্রবেশ করবে না।
নগরীর ট্রাফিক সমস্যার আরেকটি হলো গাড়ি পার্কিং। এ বিষয়ে মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, রেয়াজউদ্দিন বাজার, তামাকুমন্ডি লেন ও গোলাম রসুল মার্কেট এলাকায় অনেক মানুষ কেনাকাটা করতে আসে। কিন্তু এ এলাকায় গাড়ি পার্কিং করার ব্যবস্থা নেই। তাই শাহ আমানত সুপার মার্কেটের গাড়ি পার্কিং চালু করা এবং জিইসি মোড় এলাকায় সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে গাড়ি পার্কিং চালু করা।
তিনি আরো বলেন, পরিকল্পনাগতভাবে নগরীর গণপরিবহনে কাউন্টারভিত্তিক বাস চলাচল চালু করতে হবে। তা করা গেলে গাড়িগুলো মোড় থেকে সরে এসে কাউন্টারের সামনে দাঁড়াবে। তাতে যানজট অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
তিনি আরো বলেন, নগরীর অনেক পয়েন্টে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। একইসাথে ভাঙা সড়কগুলোও দ্রুত মেরামত করতে হবে।
পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাবনাগুলো প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘সবগুলো প্রস্তাবনাই যুক্তিযুক্ত। তবে এসব প্রস্তাবনার আলোকে নগরকে কিভাবে বাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করা যায় সেজন্য একটি যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি করা হবে। পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পাশাপাশি আমাদের নগর পরিকল্পনাবিদ ও প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে এ টিম গঠন করা হবে। শিগগিরই এ কমিটি কাজ শুরু করবে।’
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের অন্যতম সমস্যা হলো যানজট। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতার পাশাপাশি পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ, যানবাহন মালিক ও শ্রমিক, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়হীনতায় নগরীতে যানজট সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে।