নিজস্ব প্রতিবেদক »
যানজট কমাতে পরীক্ষামূলকভাবে নগরীর আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় পে-পার্কিং চালু করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। পে-পার্কিংয়ের নির্ধারিত স্থান সিটি করপোরেশন বাছাই করে দিলেও পুরো কাজে বিনিয়োগ করবে বি-ট্র্যাক নামে একটি প্রতিষ্ঠান। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হওয়া এ প্রকল্পে পার্কিংয়ের জন্য ঘণ্টা প্রতি মোটরসাইকেল ১৫ টাকা এবং তিন ও চার চাকার জন্য গুনতে হবে ৩০ টাকা।
গতকাল রোববার দুপুর ১টায় চসিক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এসব তথ্য জানান। এ সময় সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ও বি-ট্র্যাক সলিউশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম তানভীর সিদ্দিকী।
মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, ৭ মার্চ থেকে চসিকের নির্ধারিত স্থানে পে-পার্কিং চালুর জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করবে বি-ট্র্যাক সলিউশন। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে পে-পার্কিং চালু করতে পারবে বলে আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি। যানজট কমাতে নগরীর প্রত্যেকটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পে-পার্কিং এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দীর্ঘদিন যাবৎ নগরীতে যে যানজট লেগে আছে তা নিরসনের জন্য চসিক ও সিএমপি ট্রাফিক বিভাগকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে আপাতত আগ্রাবাদ এলাকায় পে-পার্কিং এর পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বি-ট্র্যাক সলিউশন এর সাথে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এই চুক্তি সফলতার সাথে বাস্তবায়িত হলে পরবর্তীতে আরও পে-পার্কিং প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, ‘নগরীর নিউ মার্কেট এলাকায় ফুটপাতকে অবৈধ দখলমুক্ত করে ওই জায়গায় সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হবে। নগরবাসী যাতে ফুটপাতে অবাধে ও নিরাপদভাবে চলতে পারে সেজন্য চসিক কঠোরভাবে নজরদারি করছে। ঠিক অনুরূপভাবে নগরীর যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধে পে-পার্কিং এর উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। নগরীকে নান্দনিক, যানজটমুক্ত ও পরিবেশবান্ধব সুন্দর শহরে রূপান্তরে সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সহযোগিতা কামনা করছি।
পে-পার্কিং নিয়ে জানতে চাইলে বি-ট্র্যাক সলিউশনের এম তানভীর সিদ্দিকী বলেন, ‘ছয় মাসের জন্য আমরা এ পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করবো। ছয় মাস পরে সিটি করপোরেশন চাইলে আরও ছয় মাস বা স্থায়ীভাবে আমরা প্রকল্পটি দেখভাল করবো। প্রথম পর্যায়ে আমরা আগ্রাবাদের পুরো এলাকাটি সিটি করপোরেশন ও পুলিশের সহযোগিতায় সার্ভে করেছি। এজন্য আমরা একটি অ্যাপও তৈরি করছি। প্রাথমিকভাবে আমরা আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোড ও প্রতœত্বাত্তিক জাদুঘর ছাড়া কমার্স কলেজের আশপাশের সবগুলো এলাকায় সিটি করপোরেশনের জায়গায় পে-পার্কিং এর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘৭ মার্চ থেকে আমরা সিটি করপোরেশনের দেওয়া জায়গায় পার্কিং জোন তৈরি করবো। প্রাথমিকভাবে ঘণ্টাপ্রতি মোটরসাইকেল ১৫ টাকা এবং তিন ও চার চাকার জন্য গুনতে হবে ৩০ টাকা। তবে দিনব্যাপী অর্থাৎ সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল ১০০ টাকা এবং তিন ও চার চাকার জন্য ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পুরোটা জোন পার্কিংয়ের আওতায় আনা গেলে ২৩০টি তিন চাকা ও চার চাকার যান এবং ১৭০টি মোটরসাইকেল একসঙ্গে পার্কিং করা সম্ভব হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা লতিফুল হক কাজমী, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ও মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, নগর পরিকল্পনাবিদ আবদুল্লাহ আল ওমর, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহীন-উল-ইসলাম চৌধুরী এবং বি-ট্র্যাক সলিউশন এর প্রকল্প প্রধান সাফায়েত আবদুল্লাহ, হেড অব সেলস সিরাজ উদ্দিন, প্রমুখ।