শীতকালীন সবজির মৌসুম এখন। এই সময়ে বাজারে সবজির সরবরাহ সবচেয়ে বেশি থাকে। নানান বৈচিত্র্য থাকে সবজিতে। এরপরও সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। যদিও দাম কমে আসার কথা এখন। দুই সপ্তাহ আগে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হয়েছে। এতে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা যার ফলে সরবরাহ কমেছে। হরতাল-অবরোধের কারণেও ক্ষেত্রবিশেষে বেড়েছে পরিবহন খরচ। এ ছাড়া এবার আলুর দাম বেশি থাকায় অন্যান্য সবজির দামে তার প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন অনেকে। গতবছর এসময় যে আলু ১৮ থেকে ২০ টাকা ছিল তা বর্তমানে ৫০ টাকার ওপরে। আর দেশি নতুন আলু বিক্রি করা হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা।
পেঁয়াজের বাজারের অস্থিরতা কাটছে না। বাজারে দেশি পেঁয়াজের যোগান ভালো থাকলেও দুই সপ্তাহ ধরে অস্থির হওয়া পেঁয়াজের দামের নিম্নমুখী প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। বাজারে দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১০৫ থেকে ১২০ আর আমদানির পেঁয়াজ বিক্রি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে । গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও আদা-রসুনের দাম চড়া। বাজারে আদা বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৮০ থেকে ২২০ টাকা ও রসুন ২১০ টাকা ।
গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে দাম ছিল ৬০-৭০ টাকা। শিমের দামও বেড়েছে। গত সপ্তাহে যে শিমের কেজি ৫০-৬০ টাকা ছিল, তা এখন কিনতে হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। প্রতিটি লাউয়ের দাম পড়ছে ৮০-১০০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ৭০-৮০ টাকা। ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটির দাম ৪০-৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০-৬০ টাকা।
ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি কেজি বিক্রি ২৯০ থেকে ৩৩০ টাকা। মহিষের মাংসের দাম কমতির দিকে থাকলেও এখনো চড়া গরু ও খাসির মাংসের দাম। মাছের বাজারে সরবরাহ ভালো টাকার নিচে মিলছে না কোন ধরনের মাছ।
মাঝারি সাইজের রুপচাঁদা, ইলিশ ও কোরাল বিক্রি হয়েছে ১ হাজার টাকার বেশি দরে। চাষের রুই, কাতলা, বিগ্রেড, কালবাউসের মতো কার্প জাতীয় মাছ বিক্রি সাইজভেদে কেজিপ্রতি ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা। পাঙাশ-তেলাপিয়া ও সিলভার কার্প ২২০-২৫০ টাকা, পাবদা-গুলশা-ট্যাংরা জাতীয় মাছ কেজি ৪৫০ থেকে ৮০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আসলে বাজারে কোনো সুখবর নেই, শৃঙ্খলাও নেই। দেখা যায় রিয়াজুদ্দিন বাজারে যে সবজির কেজি ৫০ টাকা মোমিন রোডে তা ৭০ টাকা। আবার বহদ্দারহাটে যে সবজির দাম ৪০ টাকা কর্ণফুলী বাজারে তা ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আবার উৎপাদকের কাছে যে সবজির দাম ২০ টাকা তা নগরে বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৭০ টাকা। মাঝখানে বিশাল একটি অঙ্ক মধ্যস্বত্তভোগীদের পকেটে চলে যাচ্ছে।
মোট কথা এতদিনেও আমরা একটি সুশৃঙ্খল বাজার বা বিপণন ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারিনি। যে কারণে যে যখন ইচ্ছে দাম বাড়ায়। কেন বাড়ায় তার কোনো ব্যাখ্যা নেই। এখানে নীতি-নৈতিকতার বিষয়টিও জড়িত। সারাদেশের বাজার তো পুলিশ পাহারায় চালাতে পারবে না সরকার। ব্যবসায়ী হলেও তাদেরও কিছু দায়িত্ববোধ থাকতে হবে। জনগণের প্রতি দরদ থাকতে হবে।
এ মুহূর্তের সংবাদ