মেয়র ভাবছেন একই স্থানে হকারদের বসানোর কথাও

আগ্রাবাদে নতুন করে পে পার্কিং চালু

নিজস্ব প্রতিবেদক »

যানজট কমাতে নগরীর আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে দি¦তীয়বারের মতো পে-পার্কিং চালু করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। তবে এবার পে পার্কিংয়ের স্থানে হকারদের বসানোর বিষয়টি ভাবছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
বি-ট্র্যাক সলিউশন নামের একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় সিলভার স্পুনের সামনে এবং ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সড়কে পে পার্কিং চালু করে চসিক। গতবছর পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো চালু হওয়া প্রকল্পটি নানা জটিলতায় বাধাগ্রস্ত হয়।
গতকাল বুধবার প্রকল্পটি আবার চালু করা হয়। প্রকল্প উদ্বোধনকালে মেয়র তার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু পে পার্কিং নয়, যেহেতু চট্টগ্রামের বিভিন্নস্থানে ফুটপাত দখল করে হকাররা বসে যাচ্ছে, সেহেতু যখন পে পার্কিংয়ে গাড়ি থাকে না, তখন একটা সুনির্দিষ্ট সময়ে হকাররা চাইলে স্মার্ট পে এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট অর্থ পরিশোধ করে সেখানে বসতে পারেন।’
এ সময় মেয়র প্রতি ঘণ্টায় ৩০ টাকা পার্কিং ফি পরিশোধ করে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকাকে নগরীর ‘মডেল এলাকা’ ঘোষণা দিয়ে মেয়র বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরে যে যানজট, সে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে আমি চিন্তাভাবনা করছিলাম। আজকের পে পার্কিং অনুষ্ঠানটির মধ্যে দিয়ে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকাটিকে আমরা মডেল এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছি এবং আমরা পরীক্ষামূলকভাবে যাত্রাটি শুরু করছি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে যদি দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রামের যানজট নিরসন করতে পারে, তাহলে একই প্রকল্পের আওতায় প্রতিষ্ঠানটিকে নগরীর অনান্যস্থানের দায়িত্ব দেওয়া হবে।’
মেয়র বলেন, ‘শহরটি শুধু আমার একার দায়িত্ব নয়, এই শহরটি সুন্দর করার দায়িত্ব সবার। সবাইকে এই দায়িত্ব নিতে হবে। আমি নগরের দায়িত্বে আছি; সে হিসেবে নগরবাসির কাজেও নেতৃত্ব দিতে পারি, কিন্তু নগরের দায়িত্ব নিতে হবে নাগরিকদের।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিট্যক সল্যুশন এর সিইও মো. তানভির সিদ্দিক, হেড অফ অপারেশন সাফায়াত আব্দুল্লাহ, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মুশবিয়া শুকরানা, এক্সিকিউটিভ তরিকুল ইসলামসহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, যানজট কমাতে এই প্রকল্পটি গতবছর ৩০ জুন প্রথমবারের মতো উদ্বোধন করেছিলেন সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। তখন ১৭৭টি গাড়ির পার্কিংয়ের ব্যবস্থার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ‘ইয়েস পার্কিং’নামে পরীক্ষামূলক মোবাইল অ্যাপভিত্তিক ডিজিটাল পে পার্কিং সেবা চালু করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। যেখানে অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে অর্থের বিনিময়ে গাড়ি রাখার সুবিধা পেতেন নগরবাসী। চুক্তি অনুযায়ী, পে-পার্কিং থেকে যা আয় হবে তার ৩৫ শতাংশ পেত চসিক। অর্জিত আয়ের হিসাব চসিক ও বি-ট্র্যাক সলিউশনস লিমিটেডের গঠিত আর্থিক পর্যালোচনা কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়। চুক্তিতে চসিকের ২০২৪ থেকে ২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পে-পার্কিং থেকে ৫০ লাখ টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
গতবছরের চুক্তিতে আজকের উদ্বোধনকৃত প্রকল্প চালু হচ্ছে নাকি নতুনভাবে চুক্তি হলো জানতে চাইলে ডা. শাহাদাত হোসেন সুপ্রভাতকে বলেন, ‘আগের চুক্তির কিছুটা সংস্কার আসা প্রয়োজন ছিল। আমরা প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে নতুন চুক্তিতে এসেছি। নতুন চুক্তির নিয়মেই কাজ হবে। এতে যদি নগরের যানজট কিছুটা কমাতে পারে তাহলে প্রতিষ্ঠানটিকে নগরীর কিছুস্থানের দায়িত্ব দেওয়া হবে। পাশাপাশি আমি চাই, নগরীর যততত্র যাতে হকার্সরা না বসে, একটা নির্দিষ্ট সময়ে ওই পে-পার্কিংয়ের স্থানে হকাররা বসুক। এতে হয়তো কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরতে পারে বলে আমি মনে করছি।’