পর্দা উঠছে ৯ অক্টোবর
নিজস্ব ক্রীড়া প্রতিবেদক :
করোনার জন্য দীর্ঘদিন স্থবির দেশের ক্রীড়াঙ্গন। সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশনায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সারা দেশে স্বাস্থবিধি মেনে সীমিত আকারে সারা দেশে জেলা ক্রীড়া পরিষদকে খেলাধূলা চালু করার অনুমতি দিয়েছে। আর এতে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থাই প্রথম সাড়া দিয়ে মুজিববর্ষ ফুটবল টুর্নামেন্ট মাঠে নামাতে যাচ্ছে। আগামী ৯ অক্টোবর বহু প্রত্যাশিত চার দলের মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত এ ফুটবল টুর্নামেন্ট এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইটের আলোতে শুরু হচ্ছে।
উদ্বোধনী খেলায় আবু তাহের পুতু ও রফিক আহমেদ চৌধুরী একাদশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। নির্ধারিত সময়ে খেলা ড্র হলে টাইব্রেকারে ফলাফল নিস্পত্তি হবে। এতে বিজয়ী দল ২ ও বিজিত দল ১ পয়েন্ট পাবে। ঐ দিন সন্ধ্যা ৬টায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ প্রধান অতিথি হিসেবে হিসেবে ১০ দিন ব্যাপী টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করবেন। সংস্থার প্রয়াত চার সাধারণ সম্পাদকের নামে দলগুলোতে চট্টগ্রামের স্থায়ী জাতীয় দলসহ দেশসেরা ও প্রতিশ্রুতিবান একাধিক ফুটবলার অংশ নিচ্ছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রয়াত সম্পাদকদের সন্তানরাও উপস্থিত থাকবেন। লম্বা সময় মাঠের বাইরে থাকা চট্টগ্রামের ফুটবলারদের মাঝে এ প্রতিযোগিতা ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। আগামী নভেম্বরে দেশের সর্বোচ্চ ফুটবলের আসর পেশাদার লিগের দলবদলের কথা রয়েছে। নিজেদের পুনরায় তৈরি করার পথে মুজিববর্ষ টুর্নামেন্ট তাদের বড় প্লাটফর্ম হচ্ছে। বড় বাজেটের এ টুর্নামেন্টকে ঘিরে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ব্যানার ও প্লেকার্ড স্থাপন করে ব্যাপাক প্রচারনা চলছে। আর গত একমাস ধরে পুরো মাঠে বড় হওয়া ঘাষ কেটে খেলার উপযোগী করা হয়েছে মাঠকর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে।
এ উপলক্ষে সার্বিক পরিস্থিতি জানানোর জন্য টুর্নামেন্ট কমিটি গতকাল সকালে সংস্থার কনভেনশন হলে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন।
এতে জানান, গ্যালারি ও প্যাভিলিয়নে তিন ফুট দূরত্বে বসান জন্য মার্কিং কওে দেয়া হয়েছে। আর গতকাল বিকেলে চার দলের খেলোয়াড়দের কোভিড টেস্ট করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন খেলায় নামার আগে খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারাদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে। ২৭ লাখ টাকার বাজেটের মধ্যে সংস্থার তহবিল থেকে ২০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। বাকি টাকা তিনি ও টুর্নামেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মো. শাহজাহান ব্যক্তিগতভাবে ব্যয় করবেন বলে জানান। এছাড়া চিটাগাং অনলাইন লিমিটেড (সিওএল) টুর্নামেন্টে মিডিয়া সেন্টারসহ স্টেডিয়াম ভবনে ফ্রি ওয়াইফাই সার্ভিস দিচ্ছে। অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড় ও প্রশিক্ষকদের মাঝে সন্মানী হিসেবে প্রায় ১৫ লাখ টাকা দেয়া হবে। জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ড্র, দলের নামকরণ ও জার্সি উন্মোচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। লিখিত বক্তব্যে মো. শাহজাহান বলেন, আ জ নাছিরউদ্দীনের উৎসাহ ও আন্তরিকতায় এ টুর্নামেন্ট মাঠে নামানোর সাহস পেয়েছেন। পূর্বেই ড্র অনুষ্ঠানে লটারি করে আবু তাহের পুতু (‘ক’ দল), ডা. কামাল এ খান (‘খ’ দল), এস এম কামালউদ্দিন (‘গ’ দল) ও রফিক আহমেদ চৌধুরী (‘ঘ’ দল) নির্ধারণ করা হয়। সংস্থার সহ সভাপতি ও প্রধান সমন্বয়কারী দিদারুল আলম চৌধুরী, টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ও উপ পুলিশ কমিশনার মেহেদী হাসান, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আলী আব্বাস অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া সংস্থার সহ সভাপতি এহসানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম শহীদুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও মশিউর রহমান চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন জাহাঙ্গীর, নির্বাহী সদস্য জি এম হাসান, ওয়াহিদ দুলাল, রেখা আলম চৌধুরী, অহীদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, হাসান মুরাদ বিপ্লব, মো. জমির উদ্দীন (বুলু), মো. নাসির মিঞা, প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য্য, হারুনুর রশিদ, মনোরঞ্জন দেসহ কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
এ টুর্নামেন্টে ৪ দলে খেলার জন্য রেকর্ড সংখ্যক ১৭১ জন ফুটবলার নাম অর্ন্তভূক্ত করেছিলেন। বাছাই করে প্রতি দলে ৩ জন গোলরক্ষক ও অন্য পজিসনের জন্য ২জন করে ২৩জনকে রাখা হয়েছে। প্রতি খেলার সেরা খেলোয়াড়কে পুরস্কার দেয়া হবে। টুর্নামেন্টে চার দল সিঙ্গেল লিগ ভিত্তিতে খেলবে এবং শীর্ষস্থানীয় দল দল শিরোপার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ফাইনাল হবে ১৮ অক্টোবর। দলের প্রশিক্ষকরা হলেন: ‘ক’ দল নাসিরউদ্দিন (প্রধান), জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু (সহকারী), ’খ’ দল- এজহারুল হক টিপু (প্রধান), নাজিমউদ্দিন নাজু (সহকারী), ’গ’ দল- হায়দার কবির প্রিন্স (প্রধান), নেজামতউল্লাহ (সহকারী), ’ঘ’ দল- সামসুদ্দিন চৌধুরী (প্রধান), দেবাশীষ বড়–য়া দেবু (সহকারী)। ফুটবল টুর্নামেন্টের পর চার দলকে নিয়ে প্রয়াত অপর সাধারণ সম্পাদকদের নামে একইভাবে ক্রিকেট টুর্নামেন্টও আয়োজন করার পরিকল্পনা আছে।
মহামারী করোনার জন্য খেলাধূলা বন্ধ থাকার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় স্বাস্থবিধি মেনে সীমিত আকারে খেলাধূলা আয়োজন করার জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে চিঠি প্রেরণ করার পর চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরউদ্দীন প্রাথমিকভাবে চারদলকে নিয়ে ফুটবল ও ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজনের উদ্যোগ নেন। ঝিমিয়ে পড়া খেলাধূলাকে পুনরায় চাঙ্গা করার লক্ষ্যে সংস্থার এ আয়োজন। চট্টগ্রামের স্থায়ী জাতীয় দল, বি লিগ, চ্যাম্পিয়নশিপ, চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ও প্রথম বিভাগ লিগের খেলোয়াড়ই এ টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ রাখা হয়েছে।