দ্য চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশ সেন্টার অব এক্সিলেন্স (বিসিই) এবং বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন (বিসিসি)’র উদ্যোগে ‘প্রতিযোগিতা আইন বিষয়ক’ আলোচনা সভা গতকাল সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়।
চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন’র চেয়ারপার্সন মো. মফিজুল ইসলাম, চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ ও সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর হাজ্জাজ, প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’র পরিচালক শাহেদ সরোয়ার, বিএসআরএম গ্রুপ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীর আলী হুসেইন, কনফিডেন্স সিমেন্ট’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির উদ্দিন আহমেদ, উইম্যান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা, বিজিএপিএমইএ’র সাবেক পরিচালক কেএইচ লতিফুর রহমান (আজিম) ও ইউনিভার্সাল এগ্রো করপোরেশন’র স্বত্বাধিকারী মো. টিপু সুলতান শিকদার বক্তব্য রাখেন।
সভায় প্রতিযোগিতা আইন সম্পর্কে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিসিসি’র সদস্য জিএম সালেহ উদ্দিন ও লিগ্যাল কাউন্সেল’র ম্যানেজিং পার্টনার ব্যারিস্টার ওমর এইচ খান।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ীদের সচেতন করতে কমিশনের সাথে একযোগে কাজ করার লক্ষ্যে চিটাগাং চেম্বারের ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশ সেন্টার অব এক্সিলেন্স (বিসিই) ও বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন’র মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন’র পক্ষে চেয়ারপার্সন মো. মফিজুল ইসলাম ও বাংলাদেশ সেন্টার অব এক্সিলেন্স’র পক্ষে চেয়ারম্যান ও চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম স্বাক্ষর করেন।
প্রধান অতিথি বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন’র চেয়ারপার্সন মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, ব্যবসা ক্ষেত্রে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা চর্চা নিশ্চিতের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার ২০১২ সালে ‘বাংলাদেশ কম্পিটিশন অ্যাক্ট’ প্রণয়ন করে এবং এ আইন বাস্তবায়নের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ২০১৬ সালে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন করে। এই আইন সম্পর্কে অনেকেই সচেতন নয়। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে টিকে থাকতে হলে উৎপাদনশীলতার পাশাপাশি উদ্ভাবনী দক্ষতাও প্রয়োজন। এছাড়া টেকসই অর্থনীতি জোরদার করতে এ ধরনের আইনের কোন বিকল্প নেই। তিনি আরো বলেন, এই আইনের উদ্দেশ্য ব্যবসায়ীদের ভয় দেখানো বা হয়রানি করা নয় বরং কমিশনের মূল লক্ষ্য হলো মার্কেট ব্যবস্থার মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কোন বিশেষ দল বা অসাধু গোষ্ঠী কর্তৃক সৃষ্ট যোগসাজশ বা একচেটিয়া ব্যবসার মাধ্যমে বাজারকে অস্থিতিশীল করে তোলার যে অপচেষ্টা তা চিহ্নিত ও নিরসন করা। যাতে করে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা উপকৃত হয়।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা আইনটি নতুন, তাই এখনও পর্যন্ত আইনটিকে সহজে বিশ্লেষণ করার মত পর্যাপ্ত দক্ষতা দেশে তৈরি হয়নি। এছাড়া বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের দ্রুত পরিবর্তনের কারণে ব্যবসায়িক নীতিও দ্রুত পরিবর্তনশীল এবং বিভিন্ন খাতের ব্যবসার নীতি ও কার্যক্রম বিভিন্ন রকম। তাই এই আইনের আওতায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম কোন একটি খাতের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বিরোধী দেখালেও এই একই রকম কার্যক্রম অন্য আরেকটি খাতের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বিরোধী নাও হতে পারে। তাই এই আইনের সঠিক প্রয়োগের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সেক্টরের বাজার ব্যবস্থা সম্পর্কে গভীরভাবে আলোচনা করা দরকার। তিনি আরো বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে রূপান্তর হতে হলে বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সুষ্ঠু ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি করতে প্রতিযোগিতা আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
অন্য বক্তারা বলেন, এই আইন সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীদের। আইনে কিছু কঠোর ধারা রয়েছে। এসব ধারা সংশোধন করে টেকসই ব্যবসাবান্ধব করার আহ্বান জানান বক্তারা।
এছাড়া অন্যদের মধ্যে বিসিসি’র সদস্য ড. এ এফ এম মনজুর কাদির এবং নাসরিন বেগম, চেম্বার পরিচালকবৃন্দ এ কে এম আক্তার হোসেন, মো. ইফতেখার ফয়সাল, এস এম তাহসিন জোনায়েদ ও তানভীর মোস্তফা চৌধুরী, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, আমদানি-রপ্তানিকারকগণ, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ, সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি