নিজস্ব প্রতিনিধি, মিরসরাই :
নেই পেটে ভাত। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের ভেতর ঝর ঝরিয়ে পড়ে পানি। ঘরে বৃদ্ধ মা। তাকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন মিরসরাইয়ে এক শ্রমিক লীগ নেতা। তার নাম মো. আলমগীর আলম (৩৯)। আলমগীর আলম উপজেলার কাটাছড়া ইউনিয়নের বাড়িয়াখালি গ্রামের মৃত শেখ আহম্মদের পুত্র। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মতিঝিল থানাধীন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জাতীয় শ্রমিকলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। পেশায় তিনি একজন রং মিস্ত্রী। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে লকডাউনের সময় কর্মহীন হয়ে পড়েন। সরকারি কোন সহায়তা না পাওয়ায় বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।
আলমগীর আলম জানান, তিনি দীর্ঘ ২৩ বছর যাবৎ আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছেন। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এলে বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে আসেন ঢাকায়। ঢাকায় এসে শাহবাগ থানাধীন যুবলীগ নেতা হায়দার, চঞ্জল পাটোয়ারী, মন্টুর অনুসারী হয়ে রাজনীতি শুরু করে। এ সময় দলের হয়ে বিভিন্ন মিটিং মিছিলে যোগ দিয়েছেন। মাসে এক দুই বার অসুস্থ বৃদ্ধ মাকে দেখতে বাড়িতে যান। নেই ভালো ঘর। সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের চাল দিয়ে গর গরিয়ে পানি পড়ে সব কিছু ভিজে যায়। প্রায় ৩ বছর আগে অসুস্থ মাকে চিকিৎসা করানো জন্য নিজেরদের শেষ সম্বল বাড়ির ৩ শতক জায়গা ব্যাংকে বন্ধক রেখে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেন। কিন্তু সেই ঋণ এখনো শোধ করতে পারেননি।
আলমগীর হোসেনের বৃদ্ধ মা হাসনা বানু জানান, ‘লোকে বলে আমার ছেলে ঢাকায় রাজনীতি করে। কিন্তু আমার ঘরে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। সরকারের কাছে আমি একটি ঘর দাবি করছি। মৃত্যুর আগে একটি ঘর পেয়ে সেই ঘরে ছেলের বৌ এনে মরতে চাই’।
সরেজমিনে আলমগীর আলমের বাড়িয়াখালী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশের বেড়া ও টিন দিয়ে তৈরি একটি ঘর। ঘরের চালের উপর প্লাস্টিক দেয়া। ঘরের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির পানিতে বিছানাপত্র সব ভিজে গেছে। উঠানে হাটু পরিমাণ কাঁদা।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মতিঝিল থানাধীন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জাতীয় শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন সেন্টু জানান, ‘আলমগীর আলম বর্তমানে তাদের কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি। সে দীর্ঘদিন আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। সে অত্যন্ত ভালো মানুষ’।