রাজু কুমার দে, মিরসরাই :
মিরসরাইয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার চিংড়ি পোনা নিধন হলেও তা বন্ধে নেই কোন সফল উদ্যোগ। মাছের পোনা দেশের সোনা। কিন’ এই সোনাসহ জলজ প্রাণীকে ধ্বংস করছে একশ্রেণির অসাধু মানুষ। জনবল সংকটের কারণে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে পারছে না উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর।
জানা গেছে, প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যনত্ম ফেনী নদীর মুহুরী সেচ প্রকল্প এলাকা, মিরসরাই এর সাহেরখালী, ডোমখালী, ইছাখালী, বানচন্দ খাল, ছোট ফেনী নদীর কাজীর হাট সস্নুইচ গেট, সন্দ্বীপ চ্যানেল, ফেনী নদীর মুহুরী রেগুলেটরের দু’পাশে, চর খোন্দকার, সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের জেলেপাড়া, সুজাপুর, থাক খোয়াজ লামছি, ছোট সস্নুইচ গেট, ভাঙ্গাবেড়ী, চর খোয়াজের লামছিসহ বেশ কিছু স্থানে এক শ্রেণির অসাধু জেলে অবৈধ ভাবে চিংড়ি পোনা আহরণ করে থাকে। অথচ প্রজনন মৌসুম থাকায় এ সময়টাতে নদীতে মাছ ধরার প্রতি রয়েছে সরকারি নিষেধাজ্ঞা। বিশাল উপকূলীয় এলাকায় প্রতিদিনই লাখ লাখ চিংড়ি পোনা আহরণ করা হচ্ছে। এসব পোনা আহরণ করে বিক্রি করা হয় স্থানীয় ব্যাপারিদের কাছে। ব্যাপারিরা পোনাগুলো খুলনা, সাতড়্গীরা, বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকে। চিংড়ি পোনা আহরণে স্থানীয় জেলেদের দাদনরা ব্যবহার করে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে ফেনী নদীর মিরসরাই অংশের মুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নিষিদ্ধ মশারি ও ঠেলা জাল দিয়ে জেলেরা লাখ লাখ চিংড়ি পোনা আহরণ করছে। চিংড়ি পোনা আহরণ করতে গিয়ে কোরাল, কাঁকড়া, বাইলা, মলা, ডেলা, চেউয়া, তফসে, বাটা, চাপিলা, কুচিয়া, টেংরা, পোয়া, লইট্টা, ভেটকি, ইলিশ, কাচকিসহ আরও অনেক প্রজাতির পোনা ধবংস করে ফেলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেনী নদীর মুহুরী প্রজেক্টের মিরসরাই রেগুলেটর এলাকায় চিংড়ি পোনা আহরণ করতে আসা একাধিক জেলে জানান, খুলনা থেকে চিংড়ি পোনা আহরণ করতে দু’মাসের জন্য এ এলাকায় এসেছে। স্থানীয় মহাজনের মাধ্যমে নদী থেকে এ পোনা আহরণ করে প্রতি পিস ২ টাকা ধরে বিক্রি করা হয়। দৈনিক প্রতিজনে প্রায় ১ হাজার চিংড়ি পোনা আহরণ করেন বলেও জানান তারা।
মিরসরাই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ বলেন, চিংড়ি পোনা আহরণ করা সম্পূর্ণ অবৈধ। জনবল সংকটের কারণে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা সম্ভব হয় না। আমরা শীঘ্রই এই বিষয়ে মিরসরাই উপকূল ও মুহুরী নদীর মোহনায় অভিযান পরিচালনা করবো।