মিরসরাইয়ে কমছে : কৃষিজমি থামাতে হবে

২০০৯-১০ সালেও অঞ্চলটিতে কৃষিজমির পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৫০৫ হেক্টর। তবে এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ৪০০ হেক্টরে। অর্থাৎ এক দশকে কৃষিজমি কমেছে ২ হাজার ১০৫ হেক্টর।
কৃষিসংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি চক্র এসব কৃষিজমি কম দামে কৃষকদের কাছ থেকে প্রথমে কিনে নিচ্ছে। পরে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের কাছে চড়া দামে তা বিক্রি করছে। শিল্প গ্রুপগুলো এসব কৃষিজমিতে নির্মাণ করছে কারখানা। এছাড়াও কৃষিজমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন, ফিলিং স্টেশন, ইটভাটা ও ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এখানে। রয়েছে একটি বিসিক শিল্পনগরীও। অর্থনৈতিক অঞ্চলটিতে এখনো কয়েক হাজার একর জমি খালি পড়ে রয়েছে। তবু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কৃষিজমিতে একের পর এক গড়ে তোলা হচ্ছে শিল্প-কারখানা। এতে দিন দিন কমছে কৃষিজমি।

প্রায় ২২ হাজার একর জমিতে মিরসরাইয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। সেখানে এরই মধ্যে আটটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান উৎপাদন শুরু করেছে। অবকাঠামো নির্মাণ করছে কমপক্ষে ২০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এখনো অনেক জমিই খালি রয়েছে। মিরসরাই সদরে রয়েছে প্রায় ১৫ দশমিক ৩২ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত বিসিক শিল্পনগরী। সেখানে ৮০ জন উদ্যোক্তাকে ৮৮টি প্লটও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় পাঁচ বছর আগে। তবে এখনো ৫৯টি খালি পড়ে রয়েছে। বিভিন্ন সমস্যার অজুহাতে উদ্যোক্তরা শিল্প-কারখানা নির্মাণ করছে না। অথচ কৃষিজমিতে স্থাপন করা হচ্ছে কারখানা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের দুই-তিন ফসলি জমি নানাভাবে অকৃষিকাজে ব্যবহার হচ্ছে। অথচ আইনে কৃষিজমিকে অন্য কাজে ব্যবহারের সুযোগ নেই। কিন্তু সে আইনের কোনো বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে না।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) মাঠ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দেশে দিন দিন কৃষিজমি কমছে। যদি শিল্প গ্রুপগুলো কৃষিজমিতে কারখানা নির্মাণ অব্যাহত রাখে তাহলে ভবিষতে এ অঞ্চলে খাদ্য সংকট দেখা হবে। এছাড়া পরিবেশের ওপর মারত্মক প্রভাব পড়বে।’
বেশি জনসংখ্যার দেশে কৃষিজমি কমে গেলে তা দেশের জন্য অশনিসংকেত। এখন থেকে পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব না-ও হতে পারে।