সুপ্রভাত ডেস্ক »
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) বলছে, মাস্ক না পরায় ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়ছে।
করোনার ডেলটা ধরনের দাপটে গত বছরের মাঝামাঝিতে দেশে করোনায় মৃত্যু, রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার বেড়েছিল। তবে আগস্টে দেশব্যাপী করোনার গণটিকা দেওয়ার পর সংক্রমণ কমতে থাকে। গত ডিসেম্বরের প্রথম কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনা শনাক্ত ১ শতাংশের ঘরেই ছিল। কিছুদিন ধরে সংক্রমণে আবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে।
স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাকে বর্তমান সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ বলে মনে করছে আইইডিসিআর। এখন বিয়েশাদি হচ্ছে, কেউ মাস্ক পরছে না। নির্বাচন হচ্ছে, সেখানেও মাস্ক নেই।
দেশে গত ডিসেম্বর মাসে প্রথম করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়। ওমিক্রন এখন নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
তবে দেশের চলমান সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রবণতা ডেলটার কারণে বলেই মনে করছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর। প্রতিষ্ঠানটি বলছে নভেম্বর মাসে ১০০ ভাগ রোগী ডেলটা ধরনে আক্রান্ত ছিলেন। এক মাসে তা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা না।
প্রতি মাসে করোনার জিন বিন্যাস বা জিনোম সিকোয়েন্সিং প্রতি মাসেই করে আইইডিসিআর। ডিসেম্বরের সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন না হলেও গত মাসে ওমিক্রনের কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা কম বলেই মনে করেন আইইডিসিআর। তাদের মতে আলফা বা বিটাকে অতিক্রম করে ডেলটা প্রাধান্যশীল হয়ে উঠেছিল। ডিসেম্বর মাসে সিকোয়েন্সিং এখনো হয়নি।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “এখন মূলত মাস্ক না পরা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশে সংক্রমণ বাড়ছে। ওমিক্রন এখনও দেশে সেভাবে ছড়ায়নি।”
তিনি বলেন, আগামী তিন থেকে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে দেশে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে। ডা. আলমগীর বলেন, “আমাদের অঞ্চলে এখনো ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাব বেশি। যেসব রোগী কোভিড পজিটিভ হচ্ছে তাদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে। ওমিক্রনে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় কম। তবে ওমিক্রন রোগী সামনে বাড়বে।”
“গত দুই বছর ধরে আমরা খেয়াল করেছি ইউরোপ-আমেরিকায় ছড়ানোর তিন থেকে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে আমাদের দেশেও সংক্রমণ বাড়তে থাকে। সে হিসেবে আমাদের দেশে তিন সপ্তাহ পর সংক্রমণ বাড়বে ও ৬ সপ্তাহের মধ্যে এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে,” যোগ করেন তিনি।
সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দেন তিনি।
“মাস্ক সব ধরণের ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কাজ করে। মাস্ক পরলেও ভ্যাকসিন নিতে হবে,” বলেন এএসএম আলমগীর।