বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, অনির্বাচিত, দখলদার ফ্যাসিস্ট সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদে আজকের এই সমাবেশ। অর্থাৎ আপনারা বিএনপির শুধু নেতাকর্মী নন, যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিকরা যে প্রস্তুতি নেয়, সেটি আপনারা শিখেছেন। আপনারা আগামী দিনের আন্দোলনের জন্য সৈনিক হয়ে গেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে হুকুমের সঙ্গে সঙ্গে সৈনিকরা ঝাপিয়ে পড়ে। এটাই প্রমাণ করে শেখ হাসিনার পতন অবশ্যম্ভাবী। শিগগিরই এ সরকারের পতন হবে এবং আমরা বাধ্য করব।
তিনি গতকাল শনিবার বিকাল ৩টায় আওয়ামী সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদে ঘোষিত ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় কেন্দ্রঘোষিত চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ভোট চোর, ব্যাংক চোর, শেয়ার বাজার চোরসহ যত উপাধি আছে বলে শেষ করা যাবে না। এতো চোর, এতো চুরি বিশ্বের কোনো দেশে হয় না। দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। আওয়ামী চোর ব্যতীত সাধারণ মানুষের দুই বেলা খাওয়া মুশকিল হয়ে গেছে। স্কুলের বেতন দিতে কষ্ট হচ্ছে, চিকিৎসার খরচ মেটাতে কষ্ট হচ্ছে। আওয়ামী চোর ব্যতীত বাংলাদেশের বাকি মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।
আমীর খসরু বলেন, আওয়ামী সিন্ডিকেটের কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। এই সিন্ডিকেট ছাড়া কেউ ডলার পাচ্ছে না। এমনিতে তো ডলার সব খেয়ে ফেলছে। ১০ লাখ কোটি টাকার ডলার তারা বিদেশে পাচার করেছে। এখন ডলারের রিজার্ভ শূন্যের দিকে যাচ্ছে। যা আছে তা পাচ্ছে আওয়ামী সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেট বেশি দামে পণ্য মানুষের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মসূচিতে প্রমাণিত হয়েছে এই সরকারের আর পালাবার পথ নেই। এই সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। আওয়ামী লীগের অধীনে আর কোনো নির্বাচন নয়। এরা জনগণের ভোট চুরি করেছে, চাল চুরি করেছে, তেল চুরি করেছে, জনগণের টাকা চুরি করেছে। বাংলাদেশ থেকে এখন ১২ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। এই সরকারের অধীনে কোন ধর্মের বর্ণের মানুষের নিরাপত্তা নেই। সংখ্যালঘুদের ভোটব্যাঙ্ক বানিয়ে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। ৬ বছর আগে নাসিরনগর উপজেলায় হিন্দুদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। এদিন আদালত ওই উপজেলার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সম্পাদকসহ ১৩ জনকে কারাদ-ে দণ্ডিত করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর দাম্ভিকতায় প্রমাণিত হচ্ছে তারা ভয়ের মধ্যে আছে। কারণ তারা জানে তাদের সময় শেষ হয়ে গেছে, ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে। চট্টগ্রামে জনগণকে দুর্ভোগে ফেলতে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। সুরক্ষা পরিষদের ওপর ছাত্রলীগের নেতারা হামলা চালিয়েছে। আমরা বলতে চাই, চট্টগ্রামের মানুষ অযাচিত হোল্ডিং ট্যাক্স দিবে না। যদি হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো হয়, বিএনপি আন্দোলনে নামবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে জনজীবনে সীমাহীন দুর্ভোগ নেমে এসেছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন বলেছেন, এই অবৈধ সংসদ ভেঙে একটি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন দিতে হবে। জনগণের প্রয়োজনে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে।
কেন্দ্রঘোষিত চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির এই বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, সৈয়দ আজম উদ্দীন, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি