ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের সেরা ক্লাবে পরিণত হওয়ার প্রত্যয়ে ক্লাব কলেজিয়েট চিটাগাং প্রথমবারের মতো সদস্যদের পরিবার পরিজন নিয়ে আয়োজন করলো ফ্যামিলি নাইট ২০২৪। ১ মার্চ নগরীর এমব্রোসিয়া রেস্তোরাঁয় ক্লাব সদস্যদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি ছিলো লক্ষণীয়। কলেজিয়েটসদের অংশগ্রহণে সুন্দর এই সন্ধ্যা এক অনুপম মিলন মেলার আবহ তৈরি করে।
অনুষ্ঠানের প্রারম্ভেই ঢাকার বেইলী রোডে অগ্নিকান্ডে নিহতদের স্মরণ ও শোক প্রকাশ করে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
জেরার্ড ডেপার্ডিউ অভিনীত কলম্বাসের জীবনভিত্তিক ছায়াছবি ‘১৪৯২: কনকোয়েস্ট অফ প্যারাডাইস’ এর থিম সংটি ডিজিটাল স্ক্রিনে প্রদর্শনের মাধ্যমে এই আনন্দময় আয়োজনের সূচনা করা হয়। এরপর অনুষ্ঠানের কনভেনার হারুনুর রশিদ পিন্টু স্বাগত বক্তব্য রাখেন। মূল বক্তব্য রাখেন ক্লাবের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, কলম্বাস যেমন একটি অভিযাত্রিক মন নিয়ে ভ্রমণরত ছিলেন, পৌঁছেছিলেন একটি নতুন মহাদেশে, তেমনি ক্লাব কলেজিয়েট আজকে ছোট অবস্থায় থাকলেও এটি ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের সেরা ক্লাবে পরিণত হবে।
ক্লাব চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমরা যখন কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম, তখন স্কুলঘরটি শুধু স্কুলঘর ছিল না, এটি ছিল একটি মহাবিশ্ব। এই স্কুল থেকে পাশ করে কলেজিয়েট স্কুলের মেধাবী ছেলেরা উত্তরকালে শুধু দেশে নয়, বিদেশেও মানবজাতির কল্যাণে নিয়োজিত ছিলেন বা আছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি ১৯৫৩ সালে পাশ করা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মনোয়ার হোসেন, এবং ১৯৫৫ সালে পাশ করা ড. মুহম্মদ ইউনূস, যিনি বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রমুখ ব্যক্তিবর্গের নাম উল্লেখ করেন।
ড. মোহীত বলেন, এই ক্লাবের সদস্য হিসেবে সর্ববয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি প্রকৌশলী ইব্রাহীম খান যেমন আছেন, যাঁর বয়স বর্তমানে ৯৭, তেমনি আছেন সাবেক মন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গনের লড়াকু সৈনিক ও প্রবীণ রাজনীতিক ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আছেন সাংবাদিকতায় রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম, এ, মালেক।
আনন্দসন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লাবের তরফ থেকে এম. এ. মালেককে পরিচিতিপত্র বা আই ডি কার্ড প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল ক্লাব সদস্যরাও তাঁদের আই ডি কার্ড পেয়ে যান।
ক্লাব চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহীত জানান, এবারের বইমেলায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের একুশে স্মারক সম্মাননা পদক পেয়েছেন ক্লাব কলেজিয়েটের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রভাত বাংলাদেশের সম্পাদক রুশো মাহমুদ। পদক পাওয়ার জন্য রুশো মাহমুদকে হল ভর্তি কলেজিয়েট পরিবার করতালির মাধ্যমে অভিনন্দিত করেন।
ড. মোহীত ক্লাব সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে উপস্থিত সকল সদস্যদের আহ্বান জানান, তাঁরা যেন নিজেদের পরিচিত ও বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে কলেজিয়েট স্কুল থেকে পাশ করা ব্যক্তিবর্গকে ক্লাবের সদস্যপদ গ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করেন, এবং বলেন, সহসা ক্লাব ভবনে ক্যাফে খোলা হচ্ছে, যেখানে ক্লাব সদস্যরা সন্ধ্যায় পরিবারসহ সময় কাটাতে পারবেন।
ক্লাব চেয়ারম্যানের বক্তব্যের পর ইসি সদস্য সমর বড়ুয়ার আয়োজন এবং ভাইস চেয়ারম্যান আহসান ইকবাল চৌধুরীর প্রযোজনায় পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সংগীতানুষ্ঠান।
নৈশভোজ শেষে ক্লাবের সম্মানিত সিনিয়র সদস্য এম. এ মালেক ও
ক্লাব চেয়ারম্যনের মঞ্চ উপস্থিতি ও প্রাণবন্ত কথোপকথনের মাধ্যমে র্যাফেল ড্রয়ের বিজয়ীদের মধ্যে আকর্ষনীয় পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইসি সদস্য ও এই আয়োজনের মেম্বার সেক্রেটারি বাহাউদ্দিন আহমেদ জুয়েল।