মাদক, কিশোর গ্যাং এবং যানজট নিরসনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়’র সহযোগিতা চাইলেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। গতকাল রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে নগরীর বিভিন্ন নাগরিক সমস্যা নিরসনে মতবিনিময় করেন সুজন।
এ সময় সুজন বলেন, রমজান মাসে বিকেলের দিকে গাড়ির চাপ বেশি থাকে। তাই বিকাল ৪টা থেকে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা এবং সড়ক মোড়গুলোতে গাড়ি থামানো বা পার্কিং করে রাখা কঠোরভাবে বন্ধ রাখার অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি বড় স্কুল এবং কলেজগুলোতে বাধ্যতামূলকভাবে বাস সার্ভিস চালু করা, নগরীর মার্কেটগুলোতে পে-পার্কিং চালু ও নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে পার্কিং বন্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি। নগরীর গণপরিবহনকে সুশৃংখল এবং ব্যবহার উপযোগী করে চলাচলের ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। অন্যদিকে মাদকের বেচা-কেনা ও বিস্তার রোধে মাদক কারবারি এবং মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে নগরজুড়ে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করারও আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নগরীতে উদ্বেগজনক হারে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। ছিনতাই, ধর্ষণ, লুটপাট, মাদক ব্যবসা, খুন, অপহরণ ও যৌন হয়রানিসহ ভয়ংকর সব অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে তারা। এদের উৎপাত থেকে নগরবাসীকে বাঁচাতে ফুট পেট্রোল চালু, থানার মোবাইল পেট্রোল টিম বাড়ানোসহ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির জন্য সিএমপি কমিশনারের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
এছাড়া স্কুল ও কলেজ চলাকালীন সময়ে নগরীর সিআরবি শিরীষতলা, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, কাট্টলী সি-বিচসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে কতিপয় শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা বাদ দিয়ে আড্ডা এবং অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছে। এ সকল স্থানে স্কুল ও কলেজ চলাকালীন সময় পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো এবং পতেঙ্গা থেকে কাট্টলী সমুদ্র উপকূলে গজিয়ে উঠা হোটেল রেস্টুরেন্ট বেলা ২ টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য সিএমপি কমিশনারের দৃষ্টি কামনা করেন খোরশেদ আলম সুজন।
পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় নাগরিক উদ্যোগ উত্থাপিত প্রতিটি প্রস্তাবনার সাথে সহমত পোষণ করে বলেন, নগরীর অসংখ্য জনসাধারণের নিরাপত্তাসহ আনুসাঙ্গিক বিষয় নিয়ে পুলিশের সকল সদস্য আন্তরিক। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, এ নগরীতে প্রতিনিয়ত মানুষ বাড়ছে, গাড়ি বাড়ছে কিন্তু সে তুলনায় রাস্তার সংখ্যা বাড়ছে না। নগরীতে কোন বাস কিংবা ট্রাক টার্মিনাল নাই। ভারী যানবাহনগুলো যত্রতত্র পার্কিং করে যানজট বাড়াচ্ছে। অবৈধ এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাখার জন্য কোন ডাম্পিং স্টেশন নেই। ভাঙা-চোরা গাড়ি প্রতিদিন নগরীতে যাত্রী পরিবহন করছে। যারা এসব গাড়ি চালাচ্ছে তাদের ট্রাফিক সিগন্যাল সম্পর্কে সচেতনতা নেই। ফলত যেখানে সেখানে যাত্রী উঠানামা করতে গিয়ে যানজট বাড়ছে। কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বন্ধে পুলিশ কাজ করছে জানিয়ে নগরীর প্রতিটি থানাকে এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা প্রদানের কথাও জানান তিনি। অন্যদিকে মাদক কারবারীদের ধরতে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আইন শৃংখলা রক্ষা করা এবং জনগণের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে জিরো টরালেন্স নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এছাড়া বিনোদন কেন্দ্রসমূহে অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধে পুলিশ তৎপর রয়েছে এবং নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ, সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, মো. শাহজাহান, মো. সেলিম, অনির্বাণ দাশ বাবু, স্বরূপ দত্ত রাজু প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি
মাদক, কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য বন্ধে পুলিশের সহযোগিতা চাইলেন সুজন
পুলিশ কমিশনারের সাথে মতবিনিময় সুজনের