নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া »
টানা তিনদিন ধরে অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীতে পানি প্রবাহ বেড়েছে। গতকাল সোমবার বিকালে নদীর পানি বিপদসীমার একেবারে সন্নিকটে। পানি নীচের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড চকরিয়া উপজেলা শাখা কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম। তবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে নদীতে ঢলের পানি বৃদ্ধি পেয়ে রাতের মধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করার মাধ্যমে চকরিয়া পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে এমনটা আশঙ্কা করছেন উপজেলা প্রশাসন ও পাউবো কর্মকর্তারা।
অবশ্য ইতোমধ্যে তিনদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এদিকে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পানি বেড়ে লোকালয়ে জলজটের আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.ফখরুল ইসলাম গতকাল দুপুরে উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের চোঁয়ারফাড়ি ও ঢেমুশিয়া কোনাখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে প্রবহমান বেশ কটি বদ্ধ খালের স্লুইসগেটের জলকপাট খুলে দিয়েছেন। সরেজমিন দেখা যায়, তিনদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল বিকালে নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করে নীচের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে চকরিয়া উপজেলার নদীর তীরের বিভিন্ন এলাকার নিন্মাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেন বলেন, মাতামুহুরী নদীতে পানি বেশী হলেও আমার এলাকার বেড়িবাঁধ অতিক্রম করেনি। রাতে বৃষ্টি কমলে মাতামুহুরী নদীর পানি কমে যাবে।
কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, এখনো কাকারা ইউনিয়নের মানুষ বাড়িঘরে নিরাপদে রয়েছেন। তবে আর দুইদিন এভাবে বৃষ্টিপাত হলে মাতামুহুরী নদীর ঢলের পানিতে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে কাকারা ইউনিয়ন। কারণ নদীর তীরের জনপদ হচ্ছে আমার ইউনিয়ন।
সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম বলেন, গতকাল বিকালের দিকে আমার ইউনিয়নে নদীর তীর লাগোয়া বেশকটি গ্রামে ঢলের পানি ঢুকে পড়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে নদীতে ঢলের পানি আরও বৃদ্ধি পাবে, এতে ইউনিয়নের বেশিরভাগ নীচু এলাকা তলিয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে।
গতকাল দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে মাতামুহুরী নদীতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি সহজে নিষ্কাশন করতে বিভিন্ন এলাকার বদ্ধ খালের স্লুইসগেট সমুহের জলকপাট খুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।