রাজু কুমার দে, মিরসরাই »
শীতের আগমনে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে খাদ্যের খোঁজে আসে নানান প্রজাতির পাখি। যাকে বলা হয় অতিথি পাখি। ষড়ঋতুর আবর্তে আবারো এলো শীত। শীত এলেই শুরু হয় অতিথি পাখির আগমন। এই সময়টাতে মেরু অঞ্চল, ইউরোপ, সাইবেরিয়া, এশিয়ার কিছু অঞ্চল এবং হিমালয়ের আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত বরফ পড়ার কারণে খাদ্য ও নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় চলে আসে অতিথি পাখিরা। এ সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন হাওড়-বাওড়, খাল-বিল ভরে উঠে পাখিদের আনাগোনা ও কলকাকলীতে। আবার এরা দেশের সবস্থানে যায়না। সেসব স্থানে পাখিদের খাদ্যের প্রাচুর্য্য বেশি ও বিশালাকার জলাশয়ের এলাকাতেই এরা ছুটে যায়। আর এরই সুবাদে অতিথি পাখিদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লেক মিরসরাইয়ের ‘মহামায়া’।
শীতের শুরুর দিকটাতে পাখিদের আনাগোনা কম থাকলেও বর্তমানে বেড়েছে পাখিদের সংখ্যা। অতিথি পাখিদের আগমনে মহামায়ার রূপ-বৈচিত্রে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। আর সেই পাখিদের সাথে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে সৌন্দর্য্য পিপাসুরা ছুটে আসছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহামায়ায় আসা অতিথি পাখিগুলোর মধ্যে রয়েছে বালি হাঁস, লেঞ্জা, সরালী, চখাচখী, ছোট সারস পাখি, ডুবুরি পাখি, নিশাচর পাখি ইত্যাদি। তবে এগুলো ছাড়াও আরো কিছু পাখি আসে। যেগুলোর নাম স্থানীয়রা জানে না। মহামায়ায় আসা অতিথি পাখির মধ্যে বালি হাঁস, ভোট সারস পাখি ও নিশাচরের সংখ্যা বেশি।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রত্যেকটি ঝাঁকে কয়েকশত পাখি থাকে। এরা লেকের পানিতে খেলা ও খাদ্যের সন্ধান করে। রাতের বেলায় লেকের পাশে বনে আশ্রয় নেয়।
কুমিল্লার দেবিদার থেকে আসা পর্যটক আয়েশা খাতুন ও আলমগীর দম্পতি বলেন, পরিবার পরিজন নিয়ে মহামায়ায় ঘুরতে এসে লেকের উপরে অনেক অতিথি পাখি দেখতে পেলাম। পাখিগুলো দেখে খুবই ভালো লাগছে। একদিকে মহামায়া সৌন্দর্য অন্যদিকে অতিথি পাখি দেখা দুইটোই হলো এখানে।
পাশ্ববর্তী জেলা ফেনী থেকে আগত পর্যটক শিক্ষার্থী অপেক্ষা রায় বলেন, মহামায়ায় এসে জীবনে প্রথম অতিথি পাখি দেখলাম। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি উড়তে দেখে খুব সুন্দর লেগেছে। অতিথি পাখিদের সাথে শীতের মহামায়াকে সত্যিই সুশোভিত লাগছে।
জানতে চাইলে মিরসরাই রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহান শাহ নওশাদ বলেন, প্রতি বছর শীত এলে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অতিথি পাখিদের বিচরণ বেড়ে যায়। তেমনি করে মহামায়া এলাকায়ও অতিথি পাখি দেখা যাচ্ছে। তবে শিকারিরা যাতে কোন অতিথি পাখি শিকার করতে না পারে সেদিকে আমাদের বিশেষ নজর রয়েছে।