আগামীতে এলাকাভিত্তিক লকডাউন: সিভিল সার্জন #
নিজস্ব প্রতিবেদক :
মঙ্গলবার শেষ হচ্ছে উত্তর কাট্টলীর লকডাউন। লাল জোন দিয়ে শুরু হওয়া উত্তর কাট্টলী হলুদ জোনে পরিণত হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে মঙ্গলবার লকডাউন শেষ হওয়ার পর।
এদিকে একই সময়ে নগরীর আরো ৯টি ওয়ার্ড লাল জোনে থাকলেও সেগুলো আপাতত আর লকডাউন হচ্ছে না। তবে, এখন আর পুরো ওয়ার্ড নয়, এলাকাভিত্তিক লকডাউন করা হবে।
উত্তর কাট্টলীর অবস্থা বিষয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী বলেন, ‘আমরা উত্তর কাট্টলীতে লকডাউন ঘোষণা করে এবং কার্যকর করে সুফল পেয়েছি। লকডাউন চলাকালীন সময়ে মাত্র ১৬ জন করোনায় পজিটিভ হয়েছেন। এতে এলাকাটি হলুদ জোনে পরিণত হয়েছে। তবে মঙ্গলবার লকডাউন শেষ হওয়ার পরই আমরা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবো।’
আর পুরো ওয়ার্ড লকডাউন করা হবে না জানিয়ে সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী বলেন, ‘আগামীতে এলাকাভিত্তিক লকডাউন করা হবে। অর্থাৎ কোনো ওয়ার্ডের যে এলাকায় আক্রান্তের হার বেশি থাকবে শুধু সেই এলাকাটি লকডাউন করা হবে। এতে মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমে আসবে।’
লাল জোন হিসেবে ঘোষিত ওয়ার্ডগুলো কবে নাগাদ লকডাউন ঘোষণার আওতায় আসতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লকডাউনের বিষয়টি পুরো সিদ্ধান্ত আসবে মন্ত্রণালয় থেকে। এখনো সেধরনের কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। সিদ্ধান্ত এলেই কার্যকর করা হবে। তবে লকডাউনের সময় পুরো ওয়ার্ড করা হবে না।
এলাকাভিত্তিক লকডাউন কার্যকর বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘একটি ওয়ার্ডের পুরো এলাকায় তো সমানভাবে আক্রান্ত নেই। তাহলে সমগ্র এলাকা লকডাউনের আওতায় এনে মানুষকে কষ্ট দেয়ারও কোনো মানে হয় না। একইভাবে বিশাল এলাকার লকডাউন মেইনটেইন করাও কষ্টকর। তাই সিভিল সার্জন দপ্তরের কাছে এলাকাভিত্তিক তথ্য চাওয়া হয়েছে। অর্থাৎ যে এলাকায় বেশি আক্রান্ত থাকবে সেই এলাকাটি লকডাউন কার্যকর করা হবে। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষেও নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।’
এদিকে উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে গত ১৬ জুন দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে ২১ দিনের লকডাউন শুরু হয়। লকডাউন দেয়ার আগে ১৪ দিনে উত্তর কাট্টলীতে করোনা সংক্রমিত ছিলেন ১০১ জন, যা প্রতি লাখ জনসংখ্যার হিসাবে ১৪৫ দশমিক ৫ শতাংশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাইড লাইন অনুযায়ী, প্রতি এক লাখ জনসংখ্যায় ১৪ দিনে ৬০ বা এর অধিক লোক সংক্রমিত হলে তাকে লাল জোনে এবং ৩ থেকে ৫৯ জনের মধ্যে সংক্রমিত হলে হলুদ জোন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ওয়ার্ডটির মোট জনসংখ্যা ৮০ হাজার ২৯০ জন। প্রতিলাখে ৬০ জন আক্রান্ত হলে লাল জোনে, সেহিসেবে উত্তর কাট্টলীর জনসংখ্যার বিপরীতে ১৪ দিনে ৪৮ জন সংক্রমিত হলে লাল জোন হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু ১৯ দিন পর এই এলাকায় সংক্রমিত মাত্র ১৬ জন। তাই গাইড লাইন অনুযায়ী তা হলুদ জোনে। লকডাউন শুরুর পর সার্বক্ষনিক মনিটরিং ও স্বেচ্ছাসেবকদের সক্রিয়তায় এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ায় সহজ হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই ওয়ার্ড ছাড়াও নগরীর আরো ৯টি ওয়ার্ডকে লাল জোনের তালিকাভুক্ত করেছিল সরকার। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নগরীর করোনা আক্রান্তে পরিবর্তন হওয়ায় সেসব ওয়ার্ডগুলোর তালিকাও পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়। আর সেজন্যই ওয়ার্ডভিত্তিক না গিয়ে এলাকাভিত্তিক লকডাউনে যেতে পারে।
এ মুহূর্তের সংবাদ