ভেজাল ছাড়া কি কোনো খাবার নেই

নগরে অভিযান চালিয়ে খাদ্য তৈরির একটি কারখানা ও তিনটি রেস্টুরেন্টকে ছয় লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার দুপুরে আতুরার ডিপো, মোহাম্মদপুর ও অক্সিজেন এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
অভিযান পরিচালনাকারী বশির আহমেদ জানান, খাবারে নিষিদ্ধ রাসায়নিক পদার্থ, ক্ষতিকর রং ও পোড়া তেল ব্যবহার করায় মোহাম্মদপুরের আল আকসা ফুডস নামে এক কারখানাকে দুই লাখ, পচা ও বাসি খাবার বিক্রির অভিযোগে আতুরার ডিপোর বাগদাদ হোটেলকে দুই লাখ, খাবার মেলাকে এক লাখ ও অক্সিজেন এলাকার হোটেল জামানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি জানান, অভিযানকালে রেস্টুরেন্টগুলোতে দেখা গেছে, কিছু কিছু খাবারে ফাঙ্গাস পড়ে গেছে, ফ্রিজে রাখা মাংস পচে গেছে। আল আকসা ফুডস কারখানায় ক্ষতিকর রং ব্যবহার করে চানাচুর তৈরি করা হচ্ছিল।
তাছাড়া যে তেলে চানাচুর ভাজা হচ্ছিল সে তেল এতবার পোড়ানো হয়েছে যে সেগুলো আলকাতরার মতো হয়ে গেছে। এসব খাবার খেলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
এ কর্মকর্তা নিজেই বলেছেন, ‘এসব খাবার খেলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে’। ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি আছে এমন খাদ্য যে বা যারা বিক্রি করে তাদের শুধু অর্থদণ্ড ও সতর্ক করলেই সব অপরাধ মাফ হয়ে যাবে? বিশ্বের কোনো সভ্য দেশে এ ধরনের অপরাধী কি ক্ষমা পেতো?
খাদ্যে ভেজাল করার অর্থ হলো জেনেশুনে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া। এমন ভেজাল খাবারের কারণেই আজ বাংলাদেশের ঘরে ঘরে ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, কিডনি ফেইলিউর, ব্লাড প্রেশার, ডায়াবেটিসের মতো দুরারোগ্য ব্যাধির পরিমাণ বাড়ছে। মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরপরও কী করে এমন অপরাধীদের শুধু জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে তা বড় বিস্ময়ের ব্যাপার। বরং স্লো পয়জনিং করে লাখ লাখ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার অপরাধে প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড সমতুল্য শাস্তি হওয়া উচিত। এ দেশে আইন আছে বটে কিন্তু তার যথার্থ প্রয়োগ না থাকায় অপরাধী অপরাধ থেকে বিরত হয় না।