ভারতের পররাষ্ট্রসচিবকে যা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেনছবি: সংগৃহীত

সুপ্রভাত ডেস্ক »

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতের পর যমুনার সামনে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানের কথা তুলে ধরেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়ে শেখ হাসিনা বিভিন্ন কথাবার্তা বলে এক ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন এবং বিষয়টি নিয়ে আমাদের উদ্বেগ ভারতকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

সোমবার সন্ধ্যায় প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন সৈয়দা রিজওয়ানা। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায় এবং সম্পর্ক আরও জোরদার করতে আগ্রহী। জুলাই-আগস্ট বিপ্লব ভারত মনিটর করেছে। আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, আমরা সার্ককে শক্তিশালী ভূমিকায় দেখতে চাই। আমরা যে একসঙ্গে বিমসটেকে আছি সেটাও বলেছি। আমাদের বিষয়ে বিভিন্ন যে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে সেটার বিষয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে।’

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘অপপ্রচারের জবাব লিখিত ও মৌখিক—বহুভাবেই বলেছি, যতগুলো ঘটনা ঘটেছে সেগুলোকে সাম্প্রদায়িক দেখানোর সুযোগ খুবই কম। সেগুলো কখনো কখনো ব্যক্তিগত, বেশির ভাগই রাজনৈতিক। আমাদের স্পষ্ট অবস্থান হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার না এটির অংশ, না এটি কোনোভাবেই বরদাশত করছে। যেখানে যেখানে এ রকম অভিযোগ এসেছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সচিবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিভিন্ন কারণে যে আমাদের সম্পর্কের মধ্যে একটি মেঘ এসেছে, এই মেঘটি দূর করতে হবে। আমরাও বলেছি, এই মেঘটি দূর করতে হবে।’

উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, ‘বাংলাদেশের ইমেজকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। এগুলোর বিষয়ে ভারতের বক্তব্য হচ্ছে, তাদের সরকার কোনভাবে দায়ী না। সরকার এগুলো করছে না, এমনকি এগুলো তারা ‘‘ওউনও’’ করছে না। এগুলো বিভিন্ন মিডিয়া ও সংগঠনের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে।’

ভারতে বাংলাদেশ মিশনে হামলা ও ভিসার বিষয়ে উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, ‘ভারতের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যে, তারা ভিসা বাড়ানোর উদ্যোগ নেবেন। উপ-হাইকমিশনে সহিংস আচরণের বিষয়ে আমরা আগেই প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং তারা দুঃখ প্রকাশ করেছে। আজ যেহেতু তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ও জোরদার করার কথা বলছেন, তাই আমরা ধরে নিচ্ছি যে, এসব ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশের অবস্থানে তারা এখনো আছে। নতুন করে এটা বলা হয়নি।’