রাকিবুল হাসান রাকিব :
ভোরবেলা ছায়াঘেরা হিমেল হাওয়া। বৃক্ষের নিচে খড়ের ওপর মিনি বিড়ালের তরতাজা ঘুম। চারদিকে লোকালয় নিস্তব্ধ, নিঝুম। বৃক্ষের ডগায় কাঠবিড়ালির স্বর্গীয় ঘুম। ঘাসফুলের ওপর ঘাসফড়িংয়ের দোল খাওয়া ঘুম। অক্সিজেনের জোনে প্রাণীর ঘুম, কার্বন ডাই-অক্সাইডের নেশায় ঘুম বৃক্ষের।
চারদিকে তরতাজা ঘুমের যৌবন। ক্লান্তির পতনে মিনি বিড়ালে নতুন শক্তির আবির্ভাব। এমন সময় ঘুমভাঙা ভোরে একজোড়া কাক মিমের পিস করা মাছের তিন টুকরো অবশিষ্টাংশের জন্য দুকূপের ধারে তুমুল কোলাহল সৃষ্টি করে।
অন্যদিকে মিনি বিড়ালের তরতাজা ঘুম ভাঙলে কূপের ধারে সে তীক্ষè মেজাজে আসে। বিড়ালকে দেখে তুমুল ঝগড়া-বিবাদ লাগে। একটা কাক আরেকটি কাককে বলে, তোমার জন্য তিন টুকরো মাছের অবশিষ্টাংশ এখন সব চলে গেছে।
কি দরকার ছিল! আমি এক টুকরো কম খেলেও চলতো; আমার তেমন খিধে নেই। একটু আগেই খেয়েছি। একথা শুনে আরেক কাক বলে, ‘বরং তুমি এক টুকরো কম খেলেও চলতো, আমি বেশি খাই না। ওহ্, তোমার জন্য সবটুকু গেল।
মিনি বিড়াললটি কূপের ধারে বসে বসে মেও- মেও বলে হাসে। আর খুব ভদ্র হয়ে বসে থাকে। তারপর বিড়াল কাক দুটিকে ডাকে; কাক দুটি নিচে নেমে আসে। বিড়াল কাক দুটিকে বলে, কে আগে ঝগড়াঝাটি করেছে? একটা বলে, তুমি আগে ঝগড়া করেছে, আরেকটা বলে, তুমি আগে ঝগড়াঝাটি করেছ। বিড়ালটি দেখে দুজন আবার ঝগড়া শুরু করেছে।
এরপর বিড়াল কাক দুটিকে বলে, চুপ! অনেক ঝগড়া করেছ, দেখেছি। এবার একটু থাম! বিড়াল তিন টুকরো মাছের অবশিষ্টাংশকে সামনে নিয়ে আসে। যে আগে ঝগড়া শুরু করেছে বিড়ালের সামনে, তাকে এক টুকরো দেয়। আরেকটাকে দুটুকরো মাছের অবশিষ্টাংশ দেন। মিনি বিড়াল আবার চলে যায় বৃক্ষের নিচে ঘুমাতে।
দুই কাক গাছের ওপরে ওঠে। আবার ঝগড়া করতে করতে তিন টুকরো মাছের অবশিষ্টাংশ নিচে পড়ে যায়। দেখতে পায় আবার বিড়ালকে। দুজন বিড়ালের কাছে বিচার নিয়ে আসে। বিড়ার এক টুকরো মাছের অবশিষ্টাংশ খেয়ে ফেলে আর বাকি টুকরো দু’জনকে দেয়।
তারপর কাক দুটি দু’টুকরো মাছের অবশিষ্টাংশ খেয়ে গাছের ডগায় চলে যায়। দু’জন কিছুক্ষণ নীরবে চিন্তা করে। আসলে ঝগড়া করে নিজেদের ক্ষতি হয়েছে। এরপর ভাবে, এখন থেকে কখনো এ রকম ঝগড়া করবে না।