মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, আগামী দিনের উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হলে চট্টগ্রামের উন্নয়ন সর্বাপেক্ষা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়টি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুধাবন করেছেন বিধায় চট্টগ্রামের উন্নয়নের বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখছেন। এজন্য চসিকের মাধ্যমে যেসব প্রকল্প ও ধারাবাহিক কাজ চলছে সে কাজগুলো আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে সম্পন্ন করতে হবে। চসিকের মূলত তিনটি কাজ- নগরীর পরিচ্ছন্নতা, আলোকায়ন ও রাস্তাঘাট সংস্কার। এজন্য নগরবাসী চসিককে কর প্রদান করে। এসব কাজে অবহেলা করা চলবে না।
রোববার সকালে আন্দরকিল্লা পুরাতন নগর ভবনে কে.বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে চসিকের ৬ষ্ঠ পরিষদের ১৩তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম’র পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিকসহ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরবৃন্দ। বিভিন্ন সংস্থা থেকে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ে সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল হাসান, এলজিইডি চট্টগ্রাম’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তাসাউর, ফায়ার ডিফেন্স’র সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ আলী, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী আতিকুর রহমান, ওয়াসা’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইফতেখার উল্লাহ মামুন, ডিপিএইচই’র এসডিও ইঞ্জিনিয়ার মো. গোলাম মোর্শেদ।
মেয়র আরও বলেন, জলাবদ্ধতাকে নগরবাসী প্রধান সমস্যা বলে মনে করছেন। এ সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলো এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে খাল ও নালাসমূহ যেভাবে ভরাট করা হয়েছে তা অপসারণ করতে চসিক বারবার তাগাদা দেয়ার পরও এসমস্যা দূরীকরণ হয়নি। তারা এপ্রিল মাসের ১ম সপ্তাহের মধ্যে ভরাট হওয়া খাল নালাগুলো পরিষ্কার করবে বলে চূড়ান্ত কথা দেন। আমরা আশা করব, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা তাদের কথা রাখবেন। যদি তারা ব্যর্থ হন তাহলে চসিক কোন অবস্থায় জলজট ও জলাবদ্ধতায় নগরবাসীর ভোগান্তি মেনে নিবে না। তিনি এপ্রিলের পর যে খালগুলো ভরাট করা হয়েছে তাতে গাইড ওয়ালের কাজ শেষ হোক বা না হোক তা পরিষ্কার করে দিতে স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দেন।
তিনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের বিষয়ে বলেন, চসিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমকে গতিশীল করার জন্য ৬টি জোনে বিভক্ত করে ৬জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব প্রদান করেছে। জোন প্রধান এবং এলাকার সুপারভাইজার তদারকির মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করবে।
মশার উপদ্রবের ভোগান্তি সম্পর্কে তিনি বলেন, মশক নিধনের জন্য আলাদা একটি সেল গঠন করা হয়েছে। ওষুধ ছিটানোর কাজটি যথাযথভাবে করা হচ্ছে কি না তা তদারকির জন্য বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা নিতে হবে বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের তিনি নির্দেশনা প্রদান করেন।
নগরীর মেগা প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি খালের কাজ চলছে। বাকি ২১টি খালের অবস্থান চিহ্নিত করা, কি অবস্থায় আছে তা প্রতিবেদন আকারে পেশ করার জন্য তিনি প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়াও নগরীতে যেসব খাল, নালা থেকে মাটি উত্তোলনের কাজ চলছে তাতে প্রয়োজনীয় স্কেভেটর, ড্রাম ট্রাক ও জনবলের অপ্রতুলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে স্কেভেটর ও ড্রাম ট্রাক ভাড়া এবং আউটসোর্সিং’র মাধ্যমে প্রয়োজনীয় জনবলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নগরীর আলোকায়ন বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এখনও অনেক ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত আলোকায়ন পরিলক্ষিত হচ্ছে না। যেখানে পোল, শেড নেই সেখানে পুরাতন পোল, শেড ব্যবহার করে আলোকায়নের ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি পুরাতন বিদ্যুৎ পোল জোড়া লাগিয়ে স্থাপনের বিষটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সার্বিক তথ্য বের করতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বান জানান।
তিনি সিটি কর্পোরেশনের যে যানবাহনগুলো আছে তার মধ্যে সচল, অচল এবং মেরামতযোগ্য যানবাহনের তালিকা প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
এছাড়া সৌন্দর্যবর্ধনের নামে চুক্তি লঙ্ঘন করে যারা বিলবোর্ড ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছে তাদের রিপোর্ট প্রস্তুত করে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন আকারে প্রদানের নির্দেশ দেন।
মেয়র অক্সিজেন মোড়কে হযরত গাউসুল আজম মাইজ ভান্ডারী চত্বর নামকরণের প্রস্তাব দিলে সভায় তা সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। বিজ্ঞপ্তি
ভরাট খাল ও নালা দ্রুত পরিষ্কারের তাগিদ
চসিকের সাধারণ সভায় মেয়র