সুপ্রভাত ডেস্ক »
ইত্তেফাকের এক সময়ের সম্পাদক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়কার উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি…রাজিউন)। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
আইন পেশার পাশাপাশি রাজনীতিতে নামা ব্যারিস্টার মইনুল ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ নেশনের সম্পাদক ছিলেন। তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার বড় ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যায় মইনুল হোসেন মারা জানান বলে জানিয়েছেন তার একান্ত সচিব ওয়াহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘স্যার এভারকেয়ার হাসপাতালে ছিলেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।’
৮৩ বছর বয়সী এই সাংবাদিক, রাজনীতিক ও আইনজীবী স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
পরিবারের সদস্যদের উদ্ধৃত করে ওয়াহিদুজ্জামান জানান, আজিমপুর কবর স্থানে মইনুল হোসেনকে তার বাবা-মায়ের পাশে সমাহিত করা হবে। মরহুমের প্রথম জানাজা রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় বারিধারা জামে মসজিদে এবং দ্বিতীয় জানাজা বাদ জোহর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে।
এভার কেয়ার হাসপাতালের মেডিক্যাল সার্ভিসেসের ডিরেক্টর ডা. আরিফ মাহমুদ বলেন, ‘ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বেশ কিছু দিন এভার কেয়ার হাসপাতালের প্রফেসর সালেহ আহমেদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।’
মৃত্যুর আগে পর্যন্ত নিউ নেশন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা মইনুল হোসেন দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদকও ছিলেন। তারা বাবা ছিলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। ১৯৬৫ সালে বাবার মৃত্যূর পর তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং পরে ইত্তেফাকের সম্পাদকম-লীর চেয়ারম্যানও ছিলেন। খবর বিডিনিউজ।
প্রবীণ আইনজীবী মইনুল ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের হয়ে প্রথম জাতীয় সংসদে বরিশালের ভান্ডারিয়া-কাউখালী আসন থেকে সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭৫ সালে এক দলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল গঠনের প্রতিবাদে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
ঢাকা বারে যোগ দেয়ার মধ্য দিয়ে ১৯৬৫ সালে তিনি আইনপেশা শুরু করেন। তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন ২০০০-২০০১ সাল পর্যন্ত।
এছাড়া ব্যারিস্টার মইনুল কয়েক দফায় সংবাদপত্র পরিষদের প্রেসিডেন্ট ও প্রেস কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন।
১/১১ এর সময়ে ফখরুদ্দিন আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে সাবেক উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন মইনুল হোসেন। তিনি তথ্য, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমান সরকারের আমলে এবং ১৯৭৬ সালে তিনি কারাভোগ করেন।
প্রবীণ আইনজীবী মইনুল ১৯৪০ সালের জানুয়ারিতে পিরোজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকার নবাবপুর সরকারি স্কুল থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ১৯৬১ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
একই বছরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ‘মিডল টেম্পল ইন’ এ আইন বিষয়ক পড়াশোনা করেন। ১৯৬৫ সালে বার থেকে ব্যারিস্টার-ইন-ল ডিগ্রি অর্জন করেন।