ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে সময়োপযোগী পরিকল্পনা হোক

চট্টগ্রাম মহানগরীতে বর্তমানে ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা কত তা নিয়ে সঠিক তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। কেউ বলেছে, এক লাখের বেশি। আবার অনেকের ধারণা পঞ্চাশ হাজার। এ থেকে ধরে নেওয়া যায় সংখ্যাটা ৭০-৮০ হাজারের মতো হতে পারে ।

গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নগরীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। তবে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে পুলিশের জোরালো পদক্ষেপ ছিল না। গত ১৮ এপ্রিল নগরীর কাপাসগোলা এলাকায় বৃষ্টির মধ্যে খালে অটোরিকশা পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়। তখন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন নগরীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের বিরুদ্ধে সরব হন।

এ অবস্থায় এপ্রিলে নগরীতে অটোরিকশার ব্যাটারি চার্জ করার পয়েন্টগুলোতে এবং সড়কে অটোরিকশার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালায় ট্রাফিক পুলিশ। এ সময় বিভিন্ন গ্যারেজে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়েও অভিযান পরিচালিত হয়, জব্দ করা হয় কয়েক হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ব্যাটারি।
এর জেরে অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে কয়েক দফায় পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। এরপর নগরীর মূল সড়কগুলোতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দৌরাত্ম্য কিছুটা কমে এলেও সম্প্রতি আবারও সড়কে বাহনটির চলাচল বেড়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ আগস্ট সিএমপি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নগরবাসীকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ব্যবহার থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করে।
এ নিয়ে এখনো প্রতিদিন কোথাও না কোথাও চালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হচ্ছে। অন্যদিকে সড়কে ব্যাটারিচালিত গাড়িগুলো কমে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছে যাত্রীরা। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার আধিক্যের কারণে সনাতন রিকশার সংখ্যা এমনিতেই কমে গিয়েছিল। তাছাড়া নগরীতে গণপরিবহনের অপ্রতুলতা তো রয়েছেই। এ অবস্থায় এ গাড়িগুলো হঠাৎ বন্ধ করা সমীচীন নয় বলে মনে হয়। কারণ আগেই বলেছি নগরীতে যাত্রীর তুলনায় পরিবহনের সংখ্যা কম।
এছাড়া চট্টগ্রাম নগরীর মতো উঁচু-নিচু সড়কগুলোতে প্যাডেলচালিত রিকশা চালানো অনেক কঠিন। সেখানে ব্যাটারিচালিত রিকশা একটি সুবিধা এনে দিয়েছে গরিবদের।
এক্ষেত্রে যা করা দরকার তা হলো, গাড়ির একটি বিজ্ঞানভিত্তিক মডেল নির্বাচন করা, এ গাড়িগুলোকে লাইসেন্সের অধীনে আনা, চালকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের ব্যবস্থা করা, মনোনীত চার্জ স্টেশন করা এবং গাড়ি কোথায়, কখন ও কতগুলো চলবে তার জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে তার ভিত্তিতে আইন করা।
আমরা মনে করি সময়ের চাহিদাকে অস্বীকার না করে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।