সুপ্রভাত ডেস্ক »
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ এবং তার স্ত্রীর ও তিন সন্তানের নামে থাকা আরও ১১৯টি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (২৬ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আসসামছ জগলুল হোসেন এ নির্দেশ দেন।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদ জাহাঙ্গীর গণমাধ্যমকে জানান, আদালত তার আদেশে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ১১৩টি দলিলের সব সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া ঢাকায় ২০৪২ স্কয়ার ফিটের দুটি এবং ২০৫৩ স্কয়ার ফিটের দুটিসহ মোট চারটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ রয়েছে।
তিনি আরও জানান, সেইসঙ্গে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের শতভাগ মালিকানাধীন ৮টি কোম্পানি এবং আংশিক মালিকানাধীন ১৫টি কোম্পানির শেয়ার জব্দ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে রবিবার সকালে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান গণমাধ্যমকে জানান, গত ২৩ এপ্রিল বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের নামে থাকা ৮৩টি দলিলের সব সম্পত্তি জব্দ এবং ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ (অবরুদ্ধ) করার বিষয়ে আদালত যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী, মেয়ে ও কয়েকজন স্বজনের সম্পত্তি জব্দ এবং ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার আদেশ দেন।
এই আদেশের পর থেকেই বেনজীর আহমেদের ২৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ আর্থিক লেনদেনকারী মোট ৩৩টি অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। এর ফলে তিনি ব্যাংক থেকে আর কোনো লেনদেন করতে পারবেন না।
এর আগে গত ২৩ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন জানান, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে গত ৩১ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরবর্তী সময়ে আরও কিছু গণমাধ্যমে তার (বেনজীর) বিষয়ে একই ধরনের অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই সব প্রতিবেদনে উঠে আসা অভিযোগগুলোর বিষয়ে দুদক আইন অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করেছে।
সম্প্রতি দেশের এক জাতীয় দৈনিকে দাবি করা হয়, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এই আইজিপি।
দুদক সুত্র জানায়, আদালতে দেওয়া আবেদনে বলা হয়, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সম্পত্তি ক্রোক ও ফ্রিজ না করা গেলে, তা হস্তান্তর হয়ে যেতে পারে। ফলে পরে আর রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না।
পরবর্তী সময় আদালতের দেওয়া আদেশে বলা হয়েছে, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ১৪ ধারা এবং দুদক বিধিমালা ২০০৭-এর বিধি ১৮ অনুযায়ী, সব স্থাবর সম্পত্তি জব্দ এবং অস্থাবর সম্পত্তি ফ্রিজের আদেশ দেওয়া হলো।